
পৃথিবীতে মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোতে শাসন ব্যবস্থা হিসেবে গনতন্ত্রকে তেমন কার্যকরি দেখা যায়না। আবার সেখানে সমাজতন্ত্রও নেই।
পৃথিবীতে ৫৭টির মত মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে বেশিরভাগের শাসনব্যবস্থা হিসেবে যা আছে তা হল “খিচুরীতন্ত্র”।
মানে না আছে পুরোপুরি গনতন্ত্র না আছে পুরোপুরি একনায়কতন্ত্র। বেশিরভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সরকার প্রধানদেরকে জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এক নায়কের মত শাসন কায়েম করতে দেখা যায়।
তাদের মনের মধ্যে আসলে গনতন্ত্রের আকাংখা থাকেনা। জনগনের মনেরও না। শাসকবৃন্দ জুজুর ভয়ে দেশে গনতন্ত্র গনতন্ত্র খেলা দেখায়।
আর বাদশাহ হয়ে যাঁরা দেশ চালান তাঁরা আমেরিকার মত শক্তিশালী দেশগুলোকে নানাভাবে পুরোপুরি খুশি রেখেই বাদশাহী করেন। সাথে জনগনকে খুশি রাখে নানা সুবিধাদি দিয়ে। যেমন মধ্যপ্রাচ্যের বাদশাহী শাসন ব্যবস্থার দেশগুলো। কারন ভাগাভাগি করে না খেলে বেশি দিন খাওয়া যায়না।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনাও যদি ভাগাভাগিকরে খেত তাহলে আজকে হয়ত তাকে এ পরিনতি বহন করতে হতো না।
যাহোক গনতন্ত্রের কথা ফিরে আসি। ভালো গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পুর্বশর্ত হলঃ
দেশে সকল নাগরিকের (নারীপুরুষ ও অন্যান্যদের) সমান মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার মোটামুটিভাবে প্রতিষ্ঠা করা,
দেশে বহুত্ববাদ চালু রাখা,
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নারীপুরুষকে সমান দৃষ্টিতে দেখা ও সবখানে সমান অধিকার দেয়া এবং ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা।
আরো অনেক শর্ত আছে। সেগুলো আর নাইবা বললাম।
কিন্তুু সত্যটা হল, রক্ষনশীল মুসলমান শাসক ও নাগরিকদের পক্ষে এগুলো মানা সম্ভব না। কারন এগুলো পুরোপুরি ইসলামের মুলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তাহলে আপনি কোনটি মানবেন?
ইসলামের মূলনীত নাকি গনতন্ত্রের মূলনীতি?
তবে লিবারাল মুসলমানগণ ইসলামের মুলনীতিকে কিছুটা পাশকাটিয়ে গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। আধনিক পড়ালেখার কারনে তাঁদের মনের মধ্যে ব্যক্তিস্বাধীনতা, নারী স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা জাগ্রত হয়।
তখন কী করে? তাঁরা এক ধরনের খিচুরিতন্ত্রের অবতারনা করেন। কারন ইসলামের নীতিকে সমুন্নত রাখতে হবে আবার নিজের আধুনিক চেতনারও সম্মান রাখতে হবে। দুটোর সমন্বয় করতে গিয়ে তাঁরা খিচুরিতন্ত্রের আর্বিভাব ঘটান। বা ঘটাতে বাধ্য হন। কেন বাধ্য হন তা আর নাইবা কইলাম।
এভাবে কোন কোন শাসক তার দেশের খিচুরীতন্ত্র চালাতে গিয়ে খিচুরীতে ঘুটা একটু বেশি দিয়ে ফেলেন, ফলে শাসন ব্যবস্থার পাতিল উপর হয়ে সব খিচুরি চুলায় পরে আগুন ধরে যায়।
আবার কোন শাসক লবন অথবা ঝাল বেশি দিয়ে ফেলেন। কেউ কেউ আবার তাতে একটু চিনিও মিশান। পরে সেটা আর খিচুরি থাকেনা। ঝাল পায়েশ হয়ে যায়।
বাংলাদেশের এই খিচুরীতন্ত্রে শেখ হাসিনা গত পনের বছরে নানান কিছু মিশিয়েছেন। পরে বড় করে একটা ঘুটা দিতে গিয়ে নিজের কাপড়েই আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। পরে কাপড়-চোপর ফেলে রেখে পালিয়ে জীবন টা বাচিয়েছেন।
তো এখন ডঃ মৃহাম্মদ ইউনুস সেই উপুর হওয়া খিচুরির পাতিল আবার চুলায় বসানোর চেষ্টা করছেন।
কী দিয়ে খিচুরী রান্না করলে তা সুস্বাদু হবে তার জন্য নানান সমীক্ষা চলছে। রেসেপি আমদানী করা হচ্ছে, মরিচ, লবন জোগার হচ্ছে। দেখা যাক প্রফেসর সাহেব কী খিচুরী রান্না করেন?
নাকী তিনি আসল গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করবেন?
যদিও বাংলাদেশে এখন রক্ষনশীল মুসলিমদের প্রভাব বেশ লক্ষনীয়।
স্কারবোরো, কানাডা