-0.1 C
Toronto
বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

স্বপ্নপূরীর রাজ্যে

স্বপ্নপূরীর রাজ্যে
এমন চমৎকার ত্যালত্যালে বাইম মাছের মতো চালু ভাষা দুনিয়ায় নাই খুব মিষ্টি লাগে

চট্টগ্রাম মানেই আলাদা জগৎ।

মানুষ, প্রকৃতি, খাবার, ভাষা সবকিছুতেই ভিন্নতা।

- Advertisement -

এ এলাকায় ঢুকতেই শুরু হয়ে যাবে পাহাড়, জঙ্গল, ঝর্না, লালছে মাটি, বিস্তীর্ন ফসলের ক্ষেত, বুনো ফুলের গন্ধ, পাখি, বাতাসে ভিন্ন সুবাস।

আর ভাষা।

এমন চমৎকার ত্যালত্যালে বাইম মাছের মতো চালু ভাষা দুনিয়ায় নাই। খুব মিষ্টি লাগে। যদিও খুব অল্প বুঝি। শৈশব সেখানে থাকার কারনে মারাত্মক মায়া জন্মেছে। সেই ধনীর পুল, চারতলা, বাকলিয়া, কাপাসগোলা, চকবাজার এলাকা!

মানুষগুলোও ভালো।

খাবারের স্বাদ আর ভ্যারাইটিতেও টপ লেবেলে চট্টগ্রাম।

অন্যান্য জেলার মানুষ রুই-কাতল-মৃগেল, পাংগাস, তেলাপিয়া, বোয়াল খেয়ে বিরক্ত; সেখানে চট্টগ্রামে মানুষের থালায় ওগুলো ছাড়াও জুটবে সামুদ্রিক মাছের বিশাল সম্ভার। সাথে কর্নফুলি নদী, কাপ্তাই লেকের মিষ্টি মাছ।

ভেটকি/কোরাল, লইট্টা, পোয়া, রুপচাঁদা, বাঘা আইড়, সামুদ্রিক রিটা, চিংড়ি, টুনা, রুপচাদা, লাক্ষা, চাপিলা, ছুড়ি ইত্যাদি মাছের ব্যাপক সমারোহ। বিলাতী ধনিয়া পাতা, মরিচ, ফুতা বেগুন, বেলেম্বু, লেবুর ব্যাবহার ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। লাল টকটকে মরিচ আর রসুন দিয়ে কষানো শুটকি মাছ! টক-ঝাল লেবুর কাজী! এক চামচ ঝোলে পাহাড় প্রতীম সমুদ্রের স্বাদ। সাথে শসা দেয়া মসুরের ডাল।

ছোটকালে আমি ছিলাম মধুভাতের মহা ভক্ত। আমরা বানাতে জানতাম না, তবে আশপাশের বাসা থেকে মাঝেমধ্যে দিয়ে যেত। নারকেল দেয়া সুমিষ্ট পান্তাভাতের মতো খাবারটা এখনো আমার মুখে লেগে আছে। কখনো চট্টগ্রাম গেলে খুঁজবো।

আর এমন মেজবান গরুর মাংসের স্বাদ আর কোনোখানে পাবেন না। আর, হোটেলের পরোটা, আলু ভাজির স্বাদও ভিন্ন। এমন এক নেশা ধরানো জাদু মিশিয়ে দেয়া!

আর জামাই স্পেশাল দুরুস কুরা মুরগি!

চট্টগ্রাম মানেই কচুর বাহার।

গুঁড়া কচু, কুড়ি কচু, ছড়া কচু, দুলি কচু, বন্নি কচু। নাম যাই হোক, তবে জিনিস একই- মুখা। আর আনোয়ারার পানি কচু, মানকচু, শোলা কচু, কচুর লতি। মজা টমেটর বাহার দেখে.. আমার ধারণা চট্টগ্রামে সবচাইতে বেশি ভ্যারাইটির বেগুন, টমেটো পাওয়া যায়। সিমের টেস্টও আলাদা।

আর প্রাকৃতি! ফয়েজ লেকের স্বচ্ছ পানি, মনোমুগ্ধকর ফুলের বাগান! বাটালি হীল, পতেঙ্গা সি বীচ, কর্ণফুলী নদী কিংবা এমনি শুধু শহরের মধ্যেই ঘোরাঘুরি।

দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠ মূহুর্ত হলো পতেঙ্গা বীচ এ বসে সূর্যাস্ত দেখা। ঐ দূরের জাহাজ, মাছধরা ট্রলার, সৈকতে আছড়ে পড়া উঁচু ঢেউয়ের আদর, গাংচিলদের কথোপকথন। ডুবে যাওয়া সূর্যের সোনালী ঝলমলে বিকীর্ণ রশ্মি হারিয়ে নিয়ে যাবে স্বপ্নপূরীর রাজ্যে।

বীচে লাফালাফি করা বাচ্চাদের বকা-ঝকা না দিলে জীবনেও উঠবে না। তারপর এক গাদা বালি সাথে  বাসায় যাওয়া। কত কষ্ট করে প্যান্টের পকেট, পায়ের সেলাই এর ভেতর থেকে বালি বের করা লাগতো দিনের পর দিন..

 

অটোয়া, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles