
সাভারে এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ এবং গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে আয়াতুস সিয়াম (২৫) নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৯ মার্চ) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল।
এর আগে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করলে শনিবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাতে সাভার পৌরসভার বিনোদবাইদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আয়াতুস সিয়াম সাভার সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং সাভার পৌরসভার বিনোদবাইদ এলাকার হামিদুল হক সুমনের ছেলে।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তার আয়াতুস সিয়াম সাভার সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং ভুক্তভোগী মহিলা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাভার সরকারি কলেজের বার্ষিক পিঠা উৎসবে আয়াতুস সিয়ামের সঙ্গে ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মোবাইলে নিয়মিত কথা বলে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলে সিয়াম। একপর্যায়ে সিয়াম তার বন্ধু সাফার সহায়তায় অপর বন্ধু হোসেন সাঈদীর বাসায় ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তা গোপনে মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে ধারণকৃত ওই অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে আসছিল।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট সিয়াম তার বাসায় ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ অবস্থায় ওই ছাত্রী ঘটনাটি সিয়ামের অভিভাবকদের জানিয়ে বিয়ে করার জন্য অনুরোধ করেন। তখন ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে করবে বলে সময় পাড় করতে থাকে সিয়ামের পরিবার।
অন্যদিকে সিয়াম হঠাৎ করে ওই ছাত্রীর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে পরিবারের পরামর্শে অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী পুনরায় সিয়ামের বাসায় বিয়ের দাবিতে কথা বলতে গেলে গোপনে ধারণ করা অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে চুপ থাকার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিল সিয়াম।
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল বলেন, গ্রেপ্তার আয়াতুস সিয়ামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় রবিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হবে এবং নির্যাতিত ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর হবে। এছাড়াও সিয়ামের মোবাইল ও ল্যাপটপ জব্দ করে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে।