
যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও পডকাস্ট হোস্ট লেক্স ফ্রিডম্যানকে রোববার (১৬ মার্চ) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। এতে তার ছোটবেলার কথাও ওঠে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, তার ছোটবেলা কেটেছে খুবই দারিদ্রতার মধ্যে। এমনকি স্কুলে যাওয়ার জন্য জুতাও ছিল না। একদিন তার এক চাচা তাকে জুতা ছাড়া স্কুলে যেতে দেখেন। এতে তিনি অবাক হন। এরপর তিনিই তাকে জুতা কিনে দেন। এরপর এই জুতাগুলো খুব যত্ন করে রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমার ছোটবেলা খুবই দারিদ্রতার মধ্যে কেটেছে। তবে আমরা কখনো দারিদ্রতার বোঝা টের পাইনি। দেখুন, যদি কেউ ভালো জুতা পরে, কিন্তু একটা সময় যদি সেগুলো তার কাছে না থাকে তাহলে সে এটির অভাব অনুভব করবে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের (ছোট) জীবনে কখনো জুতা পরিনি।”
চাচার জুতা কিনে দেওয়ার প্রসঙ্গে মোদি বলেন, “আমি আমার স্কুলে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে দৌড়ে চাচার কাছে যাই। তিনি আমাকে দেখে অবাক হন। জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি এভাবে স্কুলে যাও?’। তো ওই সময় তিনি আমাকে এক জোড়া ক্যানভাস কিনে দেন এবং আমাকে পরান। ওই সময় সেগুলোর দাম হয়ত ১০ থেকে ১২ রুপি ছিল। কিন্তু বিষয়টি হলো জুতাগুলো ছিল সাদা, যেগুলোতে সহজে দাগ লেগে যাবে।”
জুতা নষ্ট হয়ে যাবে এমন চিন্তা মাথায় আসলে চিন্তিত হয়ে পড়েন বলে জানান মোদি। তাই সেগুলোকে ঝকঝকে রাখতে উপায় খুঁজতে থাকেন। তিনি বলেন, “স্কুল শেষে সন্ধ্যার দিকে, আমি স্কুলে আরও কিছুক্ষণ অবস্থান করতাম। আমি এক ক্লাসরুম থেকে আরেক ক্লাসরুমে যেতাম। ক্লাসে যেসব লেখার চক পড়ে থাকত সেগুলো সংগ্রত করতাম। সেগুলোকে পানিতে ভেজাতাম। এরপর পেস্টের সঙ্গে মিশাতাম। শেষে এগুলো আমার ক্যানভাস জুতার ওপর লেপে দিতাম। এতে জুতাগুলো আবারও উজ্জল সাদা হয়ে যেত।”
এছাড়া স্কুলের কাপড় আয়রন করার জন্য ইস্ত্রি না থাকায় তামার পাতিল গরম করে সেটি দিয়ে কাপড়ের ওপর চাপ দিয়ে আয়রনের কাজটি করতেন বলেও জানিয়েছেন মোদি। তিনি বলেছেন, তার মা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্ত করতেন। হয়ত সেখান থেকেই তিনি এই অভ্যাস পেয়েছেন। এছাড়া দারিদ্রতা নিয়ে কখনো ভাবতেন না বলেও জানিয়েছেন ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেছেন, তারা যখন যা পেতেন সেটিকেই উপভোগ করতেন। এজন্য দারিদ্রতার বিষয়টি মাথায় আসত না।