
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের শিকার কলেজছাত্র মিলন হোসেনকে (২৩) মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও জীবিত ফিরে পায়নি পরিবার। নিখোঁজ হওয়ার ২৫ দিন পর পুলিশ তার গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মিলনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।
মিলনের পরিবার জানায়, দিনাজপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র মিলন হোসেনের সঙ্গে অনলাইনে পরিচয় হয় এক তরুণীর। ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে।
ওপাশ থেকে জানানো হয়, মিলনকে অপহরণ করা হয়েছে। প্রথমে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে চক্রটি টাকার পরিমাণ বাড়াতে থাকে— ৫ লাখ, ১০ লাখ, ১৫ লাখ হয়ে সর্বশেষ ২৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
অর্থের জোগান দিতে পরিবার সর্বস্ব বিক্রি করে, ধারদেনা করে।
৯ মার্চ রাতে মিলনের বাবা পানজাব আলী অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু এরপরও মিলনের আর খোঁজ মেলেনি।
নিখোঁজের পর থেকেই পুলিশ তদন্ত চালিয়ে গেলেও কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিল না। অবশেষে প্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের একজন সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী।
তিনি এলাকায় কথিত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিলনকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেজান আলীর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা স্বীকার করেছে যে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে এবং তাদের দেখানো মতে লাশ উদ্ধার করেছি।