
আশি ছুঁয়ে ফেলেছেন অমিতাভ বচ্চন । শুধু বলিউড নয়, গোটা দেশও নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাঁর অনুরাগীরা। আজও বিগ বি ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয়তম মেগাস্টার। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নীয়েও কম চর্চা হয় না। কেরিয়ারের শুরুতে কলকাতায় যে বহুদিন কাটিয়ে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন তা মোটামুটি সবাই জানে। কলকাতার এক পার্সেল অফিসে চাকরি, অভিনেতা হওয়ার জন্য স্ট্রাগল, আকাশবাণীতে পার্টটাইম কাজ। অমিতাভের কলকাতার কিসসার এই অধ্য়ায় বহুবার, বহুজায়গায় বিগ বি নিজেই বলেছেন। এমনকী, বাংলার সঙ্গে তাঁর এমন কানেকশন যে বাংলারকন্য়া অভিনেত্রী জয়াকে বিয়ে করে তিনি বাংলার জামাই। তবে জানেন কি অমিতাভের এই কলকাতা কানেকশনে রয়েছে আরও একজনের নাম? যিনি ছিলেন অমিতাভের প্রথম প্রেমিকা! হ্য়াঁ, বিগ বির জীবনের এই অধ্য়ায়টা বহু বছর ধরেই ছিল গোপনে। এবার তা ফাঁস হল বিখ্য়াত বলিউড বিশেষজ্ঞ ও লেখক হানিফ জাভেরির লেখায়।
সময়টা পাঁচের দশকের শেষ। কলকাতায় অমিতাভ স্ট্রাগল করছেন। ঠিক এই সময়ই অমিতাভের জীবনে আসে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ বিমান সংস্থার বিমানসেবিকা মায়া। সদা হাসিখুশি মিষ্টি মেয়েটির প্রেমে পড়ে যান অমিতাভ। লেখক, হানিফ জাভেরির কথায়, অমিতাভের সেই প্রথম প্রেমের সাক্ষী হাওড়া ব্রিজ, ভিক্টোরিয়া, প্রিন্সেপ ঘাট। বহু সন্ধ্য়ায় প্রেমিকার হাতে হাত দিয়ে ময়দানে ঘুরেছেন অমিতাভ। বহুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভ বলেছিলেন, ময়দানের দিকে মুখ করা গ্র্যান্ড হোটেলের রুম তাঁর পছন্দ। হয়তো সেই প্রথম প্রেমের নস্ট্যালজিয়ায় ফিরে যেতেই এমন রুম চাইতেন অমিতজি।
সে যাই হোক হানিফ আরও লিখলেন, সদ্য তখন ‘সাত হিন্দুস্থানি’ সিনেমার অফার পেয়েছেন অমিতাভ। কলকাতা ছেড়ে যেতে হবে মুম্বই (তখন বম্বে)। মুম্বইতে পৌঁছে অমিতাভ তাঁর মামা নীরুর ছোট এক বাংলোতে থাকতেন। মুম্বইয়ের সেই বাংলোতে গিয়েই অমিতাভের সঙ্গে সময় কাটাতেন মায়া। শোনা যায়, মায়ার সঙ্গে নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন অমিতাভ। তবে মায়াকে মোটেই পছন্দ ছিল না তাঁর মামা নীরুর। এই মামাই, অমিতাভের মায়ের কানে তোলেন অমিতাভের প্রেমকাব্য। অমিতাভের মা প্রথমেই এই সম্পর্ককে মেনে নেননি।
ব্যস, গণ্ডগোল শুরু। সেই সময়ই অমিতাভের কাছের মানুষরা স্পষ্ট বলেছিলেন, এই মায়া বচ্চন পরিবারের বউ হতে পারবে না। কেননা, মায়ার জীবনশৈলী বচ্চন পরিবারের সঙ্গে মানায় না। এতে অমিতাভেরই সমস্যা সৃষ্টি হবে। বন্ধুদের এই কথায় শেষমেশ সম্পর্ক ভাঙেন বিগ বি। কিছু না বলেই অমিতাভের জীবন থেকে সরে যান মায়াও। দিন যায়, রাত যায়। অমিতাভ হয়ে যান মায়ানগরীর শহেনশাহ। আর অন্তরালে চলে যান অমিতাভের প্রথম প্রেম। সেই মায়া এখন কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন, আদৌ বেঁচে আছেন কিনা তা যায়নি।