
ইউরোপের দ্বীপ রাষ্ট্র আইসল্যান্ডের শিশু কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী আস্থিলদার লোয়া থোরসদোত্তির ১৫ বছর বয়সী একজন কিশোরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান। তার ঔরসে একজন পুত্র সন্তানেরও জন্ম দেন তিনি। বিষয়টি স্বীকার করে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন ওই নারী মন্ত্রী। ঘটনাটি ৩৬ বছর আগের।
জানা গেছে, আস্থিলদার লোয়া থোরসদোত্তিরের বর্তমান বয়স ৫৮ বছর। যখন তিনি ওই কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর। পরের বছর অর্থাৎ যখন তার নিজের বয়স ২৩ এবং ওই কিশোরের বয়স ১৬ তখন একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন, যা বয়স বর্তমানে ৩৫ বছর।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধর্মীয় একটি গ্রুপের কাউন্সেলর ছিলেন আস্থিলদার। সেখানেই ওই কিশোরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়।
ওই কিশোরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের স্বীকারোক্তি দিয়ে শিশুকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আস্থিলদার। তবে পার্লামেন্ট থেকে তার পদত্যাগের কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি এখন দেশটির মধ্য-বামপন্থী পিপলস পার্টির এমপি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আস্থিলদারের ওই কিশোর প্রেমিকের নাম ইরিক আসমুন্ডসন। বর্তমানে তার বয়স ৫০। ওই সময় বাড়িতে জটিল পরিস্থিতির কারণে আশ্রয় নিয়েছিলেন ট্রু ওগ লিফ (ধর্ম ও জীবন) নামের একটি গ্রুপে। সেখানে কাজ করতেন আস্থিলদার। এই সুযোগে তাদের সাক্ষাৎ হয়। যোগাযোগ হয়। তারপর প্রেম। শারীরিক সম্পর্ক।
উল্লেখ্য, আইসল্যান্ডে সম্মতি জানানোর বয়স ১৫ বছর। কিন্তু কেউ যদি মেন্টর হন, শিক্ষক বা শিক্ষিকা হন, যদি কোনও ব্যক্তি আপনার ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হয় অথবা আপনার জন্য কাজ করে, তাহলে তার সঙ্গে ১৮ বছর বয়সের আগে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন বেআইনি। যদি এই অভিযোগে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে তাকে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল দেওয়ার বিধান আছে। ওদিকে ওই সম্পর্কের বয়স পেরিয়েছে ৩৬ বছর। কিন্তু আস্থিলদার লোয়া থোরসদোত্তির মনে করেন এরই মধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এসব ইস্যুকে তিনি এখন অন্যভাবে দেখেন।
তবে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্ট্রান ফ্রেস্টাদোত্তির বলেছেন, বিষয়টি সিরিয়াস। সাধারণ পর্যায়ে মানুষ এসব বিষয়ে যা জানেন, তার চেয়ে কিছুটা বেশি জানার কথা আস্থিলদারের। তিনি সম্প্রতি এ অভিযোগ পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তার অফিসে তলব করেন আস্থিলদারকে। সেখানেই শিশুকল্যাণ বিষয়ক ওই মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আস্থিলদার ও আসমুন্ডসনের মধ্যকার সম্পর্ক যদিও গোপন ছিল, তবু সন্তান জন্মগ্রহণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আসমুন্ডসন। এরপর প্রথম এক বছর তারা একসঙ্গে ছিলেন। কিন্তু আস্থিলদারের স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সবকিছু বদলে গেছে। ওদিকে আসমুন্ডসন আগেই আইসল্যান্ডের আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে ডকুমেন্ট জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি ওই সন্তানের ‘এক্সেস’ দাবি করেছেন। কিন্তু তার কাছ থেকে দেড় বছর ওই সন্তানের সাপোর্ট নেওয়া সত্ত্বেও সন্তানের ‘এক্সেস’ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আস্থেলদার। গত সপ্তাহে আসমুন্ডসনের একজন নারী আত্মীয় এ বিষয়ে দু’বার কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সূত্র: বিবিসি বাংলা