
প্রতীকী ছবি
পরকীয়া সন্দেহের জেরে স্ত্রীকে গুলি ও তিন সন্তানকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীর নাম যোগেশ রোহিলা। প্রদেশটির সাহারানপুর জেলার সাগাথেদা গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
স্থানীয় পুলিশ সুপার রোহিত সাজওয়ান জানান, গত ২২ মার্চ রোহিলা নিজেই পুলিশকে জানায়, সে তার স্ত্রী ও সন্তানদের গুলি করেছে। তদন্তে উঠে আসে, স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন রোহিলা। বহুবার স্ত্রীকে ওই সম্পর্ক ছাড়তে বললেও তা না মানায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। সমাজে সম্মানহানির আশঙ্কায় শেষমেশ স্ত্রী ও সন্তানদের উপর গুলি চালান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সাগর জৈন জানিয়েছেন, স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সমাজে নিজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় রোহিলা তার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে লক্ষ্য করে নিজের লাইসেন্স করা রিভলবার দিয়ে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ১২ বছরের মেয়ে শ্রদ্ধা ও পাঁচ বছরের ছেলে দেবাংশ। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় স্ত্রী নেহা ও ৭ বছরের ছেলে শিবাংশকে। পরে শিবাংশেরও মৃত্যু হয় হাসপাতালে। নেহাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। ২৩ মার্চ মৃত শিশুদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এই ঘটনায় রোহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলভার, চারটি খালি শেল, ১০টি তাজা কার্তুজ, বন্দুকের ব্যারেল এবং দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে রোহিলা জানিয়েছে, সে একজন প্রপার্টি ডিলার। ২০১২ সালে তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২০১৩ সালে শামলি জেলার কৈরানার বাসিন্দা নেহাকে বিয়ে করে।
পুলিশ জানিয়েছে, তার স্ত্রী নেহার ভাই রজনীশ কুমার অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং যোগেশ রোহিলার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দলের এক কর্মী নিজের তিন সন্তানকে গুলি করে খুন করার পরও কোনও বিবৃতি দেয়নি বিজেপি। তবে উত্তরপ্রদেশের গাঙ্গোহ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক কিরাত সিং পিটিআইকে বলেন, ‘আমি জানি না কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। এটা বেদনাদায়ক।’
এদিকে যোগেশ রোহিলা কোনো দলীয় পদে ছিলেন কি না জানতে চাওয়া হলে বিধায়ক বলেছিলেন, ‘ঘটনাটি অমানবিক এবং এই লোকটি কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে তা প্রশ্ন নয়।’