
বিমানের খাবারের স্বাদ বাড়ির খাবারের চেয়ে আলাদা। কমবেশি আমরা যারা বিমানে ট্যাভেল করেছি, এ তথ্য জানা আছে আমাদের। সে বার্গার, নুডলস, বা অন্য যে কোনও খাবারই হোক না কেন, সাধারণ স্বাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। রীতিমত সুস্বাদু খাবার খেতেও বিস্বাদ লাগে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মতো কিছু বিমান সংস্থা গবেষণা চালাচ্ছে। কম চাপ এবং আর্দ্রতায় খাবার রান্না করার এবং এর স্বাদ উন্নত করার উপায় খুঁজে বের করছে। আসলে বিমানে খাবারের স্বাদ আলাদা হওয়ার পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণই রয়েছে।
বিমানে খাবারের স্বাদ কেন বদলায়
বিমানের যাত্রীরা সাধারণত ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ ফুট উচ্চতায় থাকেন। এই উচ্চতায় স্বাদ অনুভব করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, আমরা যখন এই উচ্চতায় থাকি, আমাদের স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা কম সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, যার ফলে আমরা নোনতা, মিষ্টি বা মশলাদার স্বাদ সঠিকভাবে অনুভব করতে পারি না।
বিমানের ভেতরে বাতাসের চাপ এবং আর্দ্রতা উভয়ই খুব কম। যখন আর্দ্রতা কম থাকে, তখন আমাদের স্বাদ কম কাজ করে। গবেষকদের মতে, ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ ফুট উচ্চতায়, আর্দ্রতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত নেমে যায়, যা স্বাদ অনুভূতিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ কারণে আমরা বেশি নোনতা বা মিষ্টি স্বাদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারি না। এ কারণেই বিমানের খাবারে প্রায়ই নুন এবং মশলা যুক্ত থাকে।
তবে, নোনতা এবং মিষ্টি স্বাদ পরিবর্তিত হলেও, টক এবং তেতো স্বাদ খুব বেশি প্রভাবিত হয় না। সাধারণত বিমানে টক বা তেতো স্বাদ বেশি তীব্রভাবে অনুভব করতে পারি কারণ এই স্বাদগুলি আমাদের স্বাদকোরকের প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
বিমানের পরিবেশন করা খাবার ভিন্নভাবে রান্না করা হয়। খাবারটি প্রথমে রান্না করা হয়, তারপর ঠান্ডা করা হয় এবং বিমানে আনার আগে প্যাকেটে প্যাক করা হয়। এরপর এটি বিমানের একটি কনভেকশন ওভেনে উত্তপ্ত করা হয়। এখানে কোনও মাইক্রোওয়েভ বা গ্যাস বার্নার নেই, যা খাবারের স্বাদকে প্রভাবিত করবে। এ কারণে বিমানের খাবারের স্বাদ সাধারণত বাড়ির খাবারের চেয়ে একটু আলাদা হয়।