তিন বিলিয়ন ডলারের বেশী প্রবাসী রেমিট্যান্স শুধু এই মার্চ মাসেই এসেছে বাংলাদেশে। ভারতের অনুমতি বা ইচ্ছা অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করে চীনে ঐতিহাসিক মর্যাদাপূর্ণ সফল সফর, যে সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব দেশেই নানা ধরনের সাহায্য বন্ধ করছেন সেই সময় বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদেরকে ৭৩ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের ঘোষণা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুভেচ্ছা বাণী, রোজার মাসে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে মুন্সিয়ানা, ঈদের নয় দিনের ছুটিতে আশ্চার্যজনকভাবে ভীড়মুক্ত ট্রেন, বাস, ফেরী চলাচল, নেপালে ২৫২ টন আলু রপ্তানি, ভারতের পিয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহারে বাধ্য হওয়া ইত্যাদি হাজারো সফলতায় পূর্ণ ড. ইউনূস সরকারের কার্যক্রম।
দেখার বিষয়, চীনের সাথে ঠিক কী কী চুক্তি বা অর্জন নিয়ে তিনি দেশে ফিরেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে চারটি জিনিষ।
১। চীনা ঋণের সুদের হার ২-৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা
২। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করা
৩। বাংলাদেশে বড় ধরণের আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরী করা। চীন ঢাকায় একটি আধুনিক ও উন্নতমানের হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানা গেছে।
৪। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)
উদ্যোগের আওতায় চীন বাংলাদেশকে মোট ৪০ বিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে ২৬ বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য এবং ১৪ বিলিয়ন ডলার যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ থাকবে। তবে এখন পর্যন্ত চীন ৩৫টি প্রকল্পের জন্য ৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। যদি বিআরআইয়ের আওতায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রায় ৪% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
যেখানে কয়েকমাস আগে সাবেক সরকার প্রধান শেখ হাসিনা চীন সফরে গিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশে ফিরে এসেছিলেন, সেই কথা স্মরণে রেখে অনেকেরই চোখ এখন ড. ইউনূসের চীন সফরের দিকে। সাবেক সরকার প্রধান চীন সফরে যাবার আগে ভারত সফরে গিয়েছিলেন আর ড. ইউনুসের চীন সফর থেকে ফিরে আগামী সপ্তাহেই থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে সাক্ষাতের অনুরোধ করা হয়েছে। দেখার বিষয় রাজনৈতিক দলবিহীন ড. ইউনুস সরকার বিশ্ব কুটনীতিতে কতটুকু সফলতা দেশের জন্যে বয়ে আনতে পারেন।
স্কারবোরো, কানাডা