13.1 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ১৩, ২০২৫

স্মৃতির মণিকোঠায় বন্দী সেই সব দিনগুলি

স্মৃতির মণিকোঠায় বন্দী সেই সব দিনগুলি - the Bengali Times
১৯৭৮ সালের জানুয়ারীতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে বাড়ী চলে এসেছি

১৯৭৮ সালের জানুয়ারীতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে বাড়ী চলে এসেছি। ক্লাস শুরু মার্চ মাসে তাই একটু জিরিয়ে নেয়া। মার্চ এর শুরুতেই আব্বা বোঝাতে লাগলেন আমি যেন সময় মতো কলেজে চলে যাই। কোথায় গিয়ে উঠবো কি হবে এই সব চিন্তা আমার মাথায়। সেটি মাথায় নিয়েই ময়মনসিংহ চলে এলাম। উঠলাম ফিজিওলিজ বিল্ডং এর ১৬ নং রুমে।

এই রুমে থাকতেন আলমগীর ভাই, জব্বার ভাই, সুকান্ত দা আর আবু আজহার ভাই। আমি ঠাই নিয়েছিলাম আলমঙ্গীর ভাই এর কাছে।

- Advertisement -

ক্লাস শুরুর দু একদিন পরে আমি সেখানে পৌছেছিলাম তাই প্রথম সপ্তাহের দু দিন বাদে ক্লাসে গেলাম। কোন পরিচিতি নেই সব নূতন মুখ। দুজনকে পেলাম যাদের সাথে ইনটারভিউ এর সময় ট্রেনে পরিচয় হয়েছিলো।

ক্লাস চলছে। তখনও বেশ ঠান্ডা অর্থাৎ শীত অনুভূত হয়।, এর মধ্যেই হোষ্টেলের পুকুরে গোসল করলাম এদিন। সে দিনই জ্বর, সে কি জ্বর। একবারেই ১০৪ ফারেনহিট। সন্ধার দিকে জব্বার ভাই সাথে করে নিয়ে স্টুডেন্ট কেবিনে ভর্তি করে রেখে এলেন। রাতে আরো প্রচন্ড তাপ শরীরে। একজন সিষ্টার এসে মাথায় বরফ দেয়া শুরু করলেন। ২ ঘন্টার মাথায় তাপ কমতে শুরু করলো। আমার আর কিছু মনে হলোনা শুধু বাড়ীর কথা, মা এর কথা মনে পড়তে লাগলো।

সে সময় স্টুডেন্ট কেবিনে আমার সাথে আরো কয়েকজন বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদের মধ্যে মিনার ভাই, হুমায়ুন ভাই, কামরুল ভাই ও কেওয়েট খালীর মুকুল ভাই এর নাম খুব মনে পড়ে। একদিন বেডের উপর বসে আছি। হঠাৎ ক্যাপ্টেন ওয়াহেদ স্যার এসে ঢুকলেন। কোন স্যারকেই আমি চিনিনা। অন্য ছাত্ররা যে যার মতো বিছানায় শুয়ে পড়লো। ওয়াহেদ স্যার সরাসরি আমার কাছে চলে এসেছেন-কি খবর উত্তম? তোমার কি হয়েছে? বললাম-জ্বর। স্যার আমার হাত ধরলেন তারপর বললেন- মরা মানুষের শরীরও তেমার শরীর থেকে গরম। স্যার বেঝালেন জ্বর কোথায়।

পিবি রায় স্যার এলেন একদিন। ইনিও রসিক মানুষ। মুকুল ভাই এর File টা নিয়ে পড়ে বললেন -ওরে বাবা কোতয়ালীর মানুষ। স্যার কেওয়েটখালীকে কোতয়ালী বানিয়ে নিয়েছেন। একদিন এলেন করিম মোল্লা স্যার। স্যারকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। এক সময় খুলনাতে চাকুরীতে ছিলেন। তিনি আমাকে দেখে ঐদিনই ছাড়পত্র দিলেন।

পরদিন ক্লাসে গেলাম। এবার শুরু হলো পরিচয়ের পালা। জানালাম আমি মাত্র একদিন ক্লাস করে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম ৫ দিন। যথারীতি চলতে লাগলো এনাটমী আর ফিজিওলিজর ধকল। জলিল স্যার, নায়েবআলী স্যার, হাই ফকির স্যার এর ক্লাস। স্মৃতির মণিকোটায় বন্দী সেই সব দিনগুলি।

 

ইয়েলোনাইফ, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles