
কানাডার লিবারেল পার্টি দশ বছর টানা ক্ষমতায় ছিল। শেষের বছরগুলোতে জনমত জরীপে দেখা যাচ্ছিল লিবারেল পার্টিকে মানুষ আর চায় না। দলের নেতা জাষ্টিন ট্রুডোর অবস্হা ছিল আরো শোচনীয়। এমনিতেই দলটির সরকার ছিল মাইনোরিটি সরকার। সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না, অপর ছোট একটি বিরোধী দল এনডিপির সহায়তায় টিকে ছিল।
এক মাস আগেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে চরম ভরাডুবি হতো লিবারেল পার্টির। অথচ এই একমাসে ঘটেছে অভূতপূর্ব ঘটনা। জাষ্টিন ট্রুডো দলের নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের লক্ষ লক্ষ সদস্যের গোপন ব্যালটে নুতন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে কানাডার অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সার্বভৌমত্ব কিছুটা হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে দেশের জনগণ দল নয়, একজন যোগ্য নেতার সন্ধানে ছিলেন উন্মুখ হয়ে।
ব্যাংক অব কানাডার সাবেক গভর্নর মার্ক কার্নি যখন বিপুল ভোটে লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচিত হলেন, মানুষ এই সংকটকালে তার মধ্যেই আস্হা খুঁজে পেলেন। কিছুদিন আগেও বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়ারে পলিভার যেখানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন, নির্বাচন হলে তিনি হতেন নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রী, সেখানে এখন নির্বাচন হলে আবারো সেই বর্তমান সরকারী দল যারা টানা দশ বছর ধরে ক্ষমতায়, তারাই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন এবং মার্ক কার্নি হবেন সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী।
এর একমাত্র কারণ যোগ্যতা। অপর কারণ হলো কোন নেতা জনপ্রিয়তা হারালে তাকে সরে যেতে হয় এবং নেতৃত্ব দলের অন্য যোগ্যদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। বাংলাদেশে যদি গত ৫ই আগস্টের আগে এমন ঘটনা ঘটতো অর্থাৎ নেতৃত্ব পরিবর্তন হতো, হয়তো ততকালীন সরকারী দলের এমন অবস্থা হতো না। কানাডার ঘটনা বাংলাদেশের অতীত এবং ভবিষ্যৎ সরকারী এবং বিরোধী দলগুলোর জন্যে একটা বিরাট শিক্ষনীয় বিষয় বটে যদি তারা শিখতে চান।
বর্তমান বিশ্বে উগ্রবাদীদের যে আস্ফালন দেখা যাচ্ছে তাতে উদারবাদীদের একতাবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। কাজেই ঊদারবাদীদের ভোট দিন। উদারবাদীদের সমর্থন করুন। Vote Liberal, Be Liberal!
ছবিটিতে গতকাল লিবারেল পার্টির নুতন নেতা, কানাডার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নির্বাচনী সমাবেশে আমরা।
স্কারবোরো, কানাডা