
কানাডা আমেরিকায় পুলিশের ওপর সাধারন জনগনের অনেক ক্ষোভ। তার কারন, এরা হুটহাট করে নিরস্ত্র সাধারন মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলে। সাধারন মানুষ বলতে বিশেষকরে কালো অথবা ব্রাউন কালারের মানুষদের বোঝানো হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার পুলিশের মধ্যে “বর্নবাদ” খুব ক্রিয়াশীল। ফলে অযাচিত এ ঘটনাগুলো ঘটে এবং মানুষ প্রান হারায়।প্রত্যেকটি ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই নাগরিকদের পক্ষ থেকে তার তীব্র প্রতিবাদ দেখা যায়। প্রতিবাদের ফল স্বরুপ, পুলিশে কিছু সংস্কারের কাজ চলে। এখানকার পুলিশদের এখন মেন্টার হেল্থ এর সিম্পটন, নন-ভাইয়োলেন্ট ক্রাইসিস ইন্টারভেনশন এবং এন্টিঅপ্রেসিভ ফ্রেমওয়ার্ক এর ওপর প্রশিক্ষনও দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কোন ক্রাইসেস ম্যানেজ করার সময় সর্বশেষ অস্ত্র হিসেবে যেন বলপ্রয়োগ করা হয়। তাতে কিছুটা কাজ হচ্ছে; কিন্তুু একেবারে গুলি করে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা বন্ধ হচ্ছে না।
সম্প্রতি কানাডার অন্টারিও প্রদেশে লকডাউনকে শক্ত করতে পুলিশকে আরো বেশী করে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুলিশ এখন যে কোন পথচারীকে বা গাড়ির চালককে থামিয়ে তার পরিচয় পত্র ও ভ্রমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারবে। কিন্তুু প্রদেশের পুলিশ কর্তৃপক্ষগুলো সরকারের দেয়া এ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে লিখিতভাবে অশ্বীকার করেছে। তারা বলছে, নাগরিকদের প্রতি এ ধরনের আচরন তারা করতে পারবেনা। কারন হিসেবে মনে করা হচ্ছে যে, তারা নাগরিকদের কাছে পুলিশের ইমেজ আর নষ্ট করতে চায়না।
গতবছর আমেরিকাতে পুলিশ কর্তৃক জর্জ ফ্লয়েড নামের একজন নিরস্ত্র কালো মানুষকে হত্যার পর যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তখন একটা বিষয় বেশ জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছিল যে, পুলিশকে আর দরকার আছে কীনা? নাগরিকেদের দেয়া ট্যাক্সের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে পুলিশ পুষে লাভ কী? পুলিশের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরীর ওপর জোর দেয়ার কথা বলা হচ্ছিল। তার মধ্যে কমিউনিটি পুলিশিং অন্যতম। এ পদ্ধতি ইতো:মধ্যে বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশের পুলিশ গতবছর করোনা প্রতিরোধে লকডাউন এনফোর্স করতে গিয়ে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছিল। কিন্তুু তারপরেও তাদের অবদান বেশ প্রশংসনীয় ছিল দেশবাসীর কাছে। কিন্তুু সেগুলোর কথা বাংলাদেশের পুলিশেরা বোধহয় ভুলে গেছে। এখন আবার লকডাউন এনফোর্সমেন্ট করতে গিয়ে আবারও নানারকম ঘটনার জন্ম দিচ্ছে যা খুব সহজেই এড়ানো যেত। যেমন এলিফ্যান্ট রোডের এক নারী ডাক্তার এর সাথে বাধানো আজাইরা ক্যাচাল যাএকেবারেই অনাকাংখিত।
চট্রগ্রামের পাচ শ্রমিক হত্যাকান্ডের ঘটনাটাও পুলিশ সহজে এড়াতে পারত শুধু মাত্র একটু নেগোসিশেয়ন স্কিল ব্যবহার করলেই।
এগুলো দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর ও ততোর্দ্ধ কর্মকর্তাদেরও নন ভাইয়োলেন্ট ক্রাইসিস ইন্টারভেনশন, নেগোশিয়েশন, মেন্টাল হেল্থ এবং এন্ট্রিওপ্রেসিভ ফ্রেমওয়ার্ক এর ওপর প্রশিক্ষন প্রদান ও তা সিরিয়াসলি বাস্তবায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। সোসাল মিডিয়ার যুগে এখন কেউ ভুল করে আর পার পাচ্ছে না।
পুলিশের কাজ খুব সেনসিটিভ। খুব সাবধানে তাদের দায়িত্ব পালনের সময় এসেছে। পুলিশের পোষাক পরে মাস্তানি করার দিন হয়ত শেষ হয়ে আসছে। সময়ের সাথে সাথে শুধু পুলিশ নয়, সব পেশার সদস্যদের আচরন ও কৌশল পরিবর্তন জরুরী। নইলে সমুহ বিপদ।
০৫ মে, ২০২১
টরন্টো