
প্রতীকী ছবি
নববর্ষের প্রথম দিনই মর্মান্তিক পরিণতি। পরকীয়া সম্পর্কে পরিবারের বাধা মানতে না পেরে ‘আত্মঘাতী’ যুগল। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ থানার অন্তর্গত পাইকপাড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, দূঃসম্পর্কের ভাগ্নের সঙ্গে মামির প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু তা মেনে নেয়নি পরিবার। আর সেই জ্বালা থেকে ভিডিও কল করে দুই বাড়িতে দু’জন আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে দাবি। খবর পেয়ে বজবজ থানার পুলিশ তাঁদের মোবাইল দুটি বাজেয়াপ্ত করেছে। দেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর দশেক আগে বজবজ থানার অন্তর্গত নন্দনপুরের বাসিন্দা ১৯ বছরের অনন্যা নামে এক তরুণীর সঙ্গে পাইকপাড়ার আশা গাজিতলার বাসিন্দা, রণজিৎ সর্দারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পরবর্তী সময়ে তাঁদের বিয়ে হয় দুই পরিবারের সম্মতিতে। রণজিৎ-অনন্যার এক আড়াই বছরের সন্তানও রয়েছে। রণজিতের একটি বাইক সারানোর গ্যারেজ রয়েছে। এতদিন সংসার ঠিকঠাকই চলছিল। বাদ সাধল একটি ঘটনায়।
মিশুক বলে পরিচিত অনন্যা কোনওভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রণজিতের পিসতুতো দিদির ছেলে রাকেশ ওরফে রকি বাগের সঙ্গে। রকি একটি প্রাইভেট সংস্থায় কাজ করতেন। অনন্যার চোখে স্বামী রণজিতের চেয়ে রকি বেশিই স্মার্ট ও আকর্ষণীয় ছিল। প্রায়শয়ই রকির মামার বাড়িতে আগমন, খাইয়েদাইয়ে মামির আদরযত্ন, ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলাটা – সবটাই পরিবারের লোকজনের নজরে পড়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন। কারণ একটাই, সম্পর্কে তাঁরা মামি এবং ভাগ্নে। তাই অন্য কোনও সম্পর্কের কথা মাথায় আসেনি তাঁদের। তবে রকির পরিবার অভিযোগ করত, আয়ের বেশিরভাগ অংশই মামির পিছনে খরচ করতেন। সম্প্রতি মাস দুয়েক হল রকি আর কাজে যাচ্ছিলেন না। বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছিল মামির সঙ্গে।
সোমবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা কারওই জানা নেই। বেশ কিছুক্ষণ দু’জনেই দু’জনের বাড়িতে আলাদা আলাদাভাবে মোবাইলে কথা বলতে বলতেই এই সিদ্ধান্ত। ঘটনার ঠিক পর মুহূর্তে দেখা যায়, অনন্যার শরীরে প্রাণ রয়েছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে বজবজ পৌর হাসপাতালে তড়িঘড়ি নিয়ে আসলেও কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সূত্রের দাবি, আপাতত দুটো মোবাইলই বজবজ থানার পুলিশ তাদের হেফাজতে রাখার পাশাপাশি দেহ দুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। দুই পরিবারের এই মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন