
এদেশের মাটি অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। তারমধ্যে প্রধান হলো সান্ত্বনার খনি। বাঙালিরা তুলবে আর মুক্ত হস্তে বিতরন করবে, ফ্রী!
ছ্যঁকা খাইছেন? কোন সমস্যা না, হাজারটা শুভাকাঙ্ক্ষী আপনার মাথায় হাত বুলায়ে বলবে- তোর কপালে আরও ভালোটা রাখছে। চাকরি-বাকরি পা, যা চাবি তাই পাবি। ঐ পাগলী গেছে বাঁইচে গেছিস!
জটিল অসুখ হইছে? আরে ধুরো.. কিচ্ছু হয়নি, রিপোর্ট ভুল। সকালে উঠে হালকা কুসুম গরম পানিতে লেবু চিপে খাবি, রোগ-শোক পালানোর রাস্তা পাবে না।
জামা ছোট হইছে? ছোটই তো স্টাইল? বড়ো হলে বলবে হাওয়া ঢুকবে, সামনে গরম আসতেছে; টাইট ফিটিং পরে ঘামতে ঘামতে মরবি?
পকেটে পয়সা নাই? বিখ্যাত বিজ্ঞানী, মনিষী, কবি-সাহিত্যিকের চাল কেনার টাকা পর্যন্ত ছিল না। তারা মরার দুইশো বছর পরে হইছে বিখ্যাত। ধৈর্য্য ধর, সু-সময় আসতেছে। নজরুল কী বলছে শুনিসনি?- “হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান”।
আমার মাথা ভরা টাক, বউ বলে- তাতে কী, নায়ক ব্রুস উইলিসেরও তো টাক? এরকম চকচকে টাক কয়জনের আছে? আমার খালাতো ভাই বলে আমার নাকি লক্ষী টাক!
লে ঠ্যালা সামলা..
কেউ না মরলে টেরই পাবেন না মরা মানুষ কত ভাগ্যবান। দুনিয়ায় বেঁচে থাকাটা আরো কষ্টের। বেহেস্তে যাবার যোগ্যতা না থাকলেও সমস্যা নাই। বাঙালি ঠেলে-ঠুলে ঠিকই পাঠাবে, ইনশাআল্লাহ!
আর বউ মরলে?
(থাক ভাই, এ নিয়ে পাব্লিকলী আর না বলি। একবার মুসলমানির কষ্ট বলতে গিয়ে মহিলাদের কাছে যে ধরা খাইছিলাম..)
আপনি পেটুক? আমার মতো বেশি খান? কোনো সমস্যা না; যত বেশি খাবেন, তত “কম খানেওয়ালা” উপাধি পাবেন। যত না না করবেন, ততো প্লেটে ভাত এসে পড়বে। বাঙালিরা এতো উদার!
ভাড়া বাসায় থাকেন? ভাইরে, কি যে আরামে আছেন! ট্যাক্স, বিল, ফিক্সিং এর সমস্যা নাই। বিশ্বস্ত দারোয়ান খোজা লাগে না। গাড়ি থাকলে আরও বেশি সমস্যা; ড্রাইভার রাখো, ঠিক করো, তেল কিনো..। ছোট বাসা? বেঁচে গেছেন, বড়ো বাড়ি মেইনটেইন করার মতো কষ্টের আর কিছু নাই।
ওমা, তুই কালো কে বলল? কি মিষ্টি উজ্জ্বল শ্যামলা! ফর্সা বাঙালি তো আসল ফর্সা না, ওরা ধ্বলা রোগে আক্রান্ত।
হস্পিটালে অপারেশন করতে যাচ্ছেন? আরে ভাই, শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন। কিচ্ছু হবে না। আজকালকার দিনে অপারেশন করা আর নখ কাটার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে?
হাত পা ভাংছে?
আপনার মতো সৌভাগ্যবান এ দুনিয়ায় আর নাই। মাজা ভাংলে কি সর্বনাশটা হতে পারতো? অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।
আর যারা ছেলের আশায় সাতটা মেয়ে নিছে, তারা জানেও না কতটা ভাগ্যবান! তাদের জন্য বেহেস্তে ডুপ্লেক্স বাড়ি ধোয়া মোছা চলতেছে!
শিগগির!
অন্যরা পুরষ্কার পাবে, আর আপনি আংগুল চুষবেন; তা কী করে হয়? বাঙালিরা সে ব্যাবস্থাঅ করে রাখছে। এজন্য আছে সান্ত্বনা পুরস্কার!
খুব ভাল্লাগে..
ছেলে-মেয়েরা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারেনি? আরও ভালো। বাড়ির গরম ভাত খেয়ে কলেজে অনার্স পড়তে যাবে, বাপ-মায়ের দেখাশোনা করতে পারবে, জমিজমা দেখবে। মেসে থাকার খরচ নাই।
এরচেয়ে ভালো আর কি হতে পারে?
অটোয়া, কানাডা