
স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় কোলের সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন গর্ভধারিণী মা লাবনী আক্তার। আর সেই টাকায় পায়ের নূপুর, নাকের নথ ও শখের মোবাইল ফোন কিনেছেন বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। তবে এখন তিনি অনুতপ্ত। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের শেওড়াতলা এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বামী থানা-পুলিশকে ঘটনা জানালে শিশুটি উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে তারা।
জানা যায়, উপজেলার পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুরের বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার লিজার দুই বছর আগে বিয়ে হয়। ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের এ বিয়ে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই রবিউলের অসচ্ছলতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রবিউল সংসারে শান্তির প্রয়োজনে বাড়ির পাশেই ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত চার মাস আগে তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।
রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ছেলে তামিমের জন্মের পর থেকে সংসারে শান্তি নেমে আসে। অল্প কয়েক দিন আগে লাবনী আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। কয়েক দিন পর বাড়ি আসতে বললে লাবনী দুর্ব্যবহার করে। আমার সঙ্গে ঘর-সংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। আমি কয়েক দিন পর আবার ফোন করে বলি তামিমের দাদা অসুস্থ। ছেলেকে নিয়ে আসো। তিনি তামিমকে দেখতে চাচ্ছেন। লাবনী তাতেও ফিরে আসেনি। বারবার যোগাযোগের পর বৃহস্পতিবার লাবনী সন্তান বিক্রি করে ফেলার খবর দেয়। পরে কৌশলে লাবনীকে ভূঞাপুর থেকে পাকুটিয়ায় ডেকে এনে ধরে বাড়ি নিয়ে আসি। এ সময় সে শিশু তামিমকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।
শিশু তামিমের মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি মনির নামের একজনের সহযোগিতায় ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছি। ওই টাকা দিয়া মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনছি। এইডা আমার ভুল হইছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর বলেন, লাবনী নামের এক মা তার ছেলেকে বিক্রি করেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।