9.9 C
Toronto
সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫

পদ পেতে স্ত্রীকে তালাক দিলেন ছাত্রদল নেতা, অতপর…

পদ পেতে স্ত্রীকে তালাক দিলেন ছাত্রদল নেতা, অতপর… - the Bengali Times
স্ত্রী শিখা ও ফয়সাল রেজা ছবি সংগৃহীত

সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব ফয়সাল রেজার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে রাজনৈতিক পদ নেওয়ার অভিযোগে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে শিখা নামে এক তরুণী ফয়সাল রেজার স্ত্রী দাবি করেন। এ সময় রেজা বিরুদ্ধে অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎসহ নানা হয়রানির অভিযোগও তোলেন ওই তরুণী।

শিখা জানান, ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ ফয়সালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা একসঙ্গে সংসার শুরু করেন।

- Advertisement -

শিখার দাবি, ফয়সাল বেকার ছিলেন এবং সংসারের সমস্ত খরচ তাকেই চালাতে হয়েছে। এমনকি ফয়সাল তার পরিবার ও বিদেশে থাকা ভাইদের কাছেও টাকা পাঠাতেন শিখার কাছ থেকে নেওয়া অর্থ দিয়ে। এক পর্যায়ে তাকে মালয়েশিয়ায় থাকা ফয়সালের ভাইদের জন্য তিন লাখ টাকাও দিতে হয়। টাকা না দিলে ফয়সাল তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন অজুহাতে ফয়সাল তার কাছ থেকে টাকা নিতেন। তার মা সুদে টাকা ধার করতেন, সেই ঋণ শোধ করতেও শিখাকে বাধ্য করা হতো। শিখা বলেন, ‘সে যে রাজনীতি করত সেটা আমি বিয়ের পর জানতে পারি। সে বলত, মোহাম্মদপুরে তার বাইয়িং হাউসের ব্যবসা আছে তার বন্ধু দিদারের সঙ্গে। ব্যবসার নামেও আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এমনকি আমাদের বিয়ের পর কক্সবাজার বেড়াতে গেলে দিদারও আমাদের সঙ্গে ছিলেন।’

শিখা অভিযোগ করেন, ‘সে খারাপ উদ্দেশ্যে বিয়ে করেছে, আমি তা বুঝিনি। তার নিজে খরচ করার মতো সামর্থ্য নেই। কিছুদিন তার বোন সুমাইয়ার বাসায় থাকলেও, সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। তখন সে আমার কাছে ফিরে আসে, টাকা পেলে আবার চলে যায়। এক সময় সে জানিয়ে দেয় যে সে আর সংসার করতে চায় না। অথচ যে টাকা-পয়সা নিয়েছে, সেসব সে অস্বীকার করে।’

তিনি আরও বলেন,‘সে আলমারি ভেঙে আমার স্বর্ণালংকার চুরি করেছে এবং আমি যে রিয়েল স্টেট কোম্পানিতে চাকরি করি, সেখান থেকে পাঁচ লাখ টাকাও চুরি করেছে। আমার কাছে প্রতিটি বিষয়ের প্রমাণ রয়েছে।’

গত কুরবানির ঈদে ফয়সাল তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। এরপর আরও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে বসুন্ধরায় মার্কেট করতে যায়। এ সময় ফয়সালের গ্রামের এক মেয়ে শিখাকে প্রশ্ন করেন, সে কি ফয়সালের স্ত্রী কিনা, কারণ ফয়সাল সেই মেয়েকে বিয়ে করতে তার পরিবার নিয়ে মেয়েটির বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছে।

শিখা জানান, ‘গত ৫ আগস্টের পর সে আমার থেকে টাকা নিয়ে আমাকে এড়িয়ে চলে, হলে দখল নেয়, নেতা হয়ে যায়। তখন সে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। আমি সমস্ত খরচ দিয়েও তাকে আটকে রাখতে পারিনি। এই ঘটনা আমার সামাজিক মর্যাদাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৩১ আগস্ট সে এক বয়স্ক নারীর জন্মদিন উদ্‌যাপন করে। এরপর আমি বিয়ের কাবিননামা ও লিখিত অভিযোগ ছাত্রদলের পার্টি অফিসে জমা দিই। ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি জানতেন এবং আমাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার কারণে ফয়সাল দলবল নিয়ে আমার অফিসে হামলা চালায় এবং গোপনে আমাকে তালাক দেয়। আমি তখন বিষয়টি জানতাম না। পরে এক মাস পর সে তালাকপত্র আবার প্রত্যাহার করে।’

এই ঘটনার পর সরকারি বাংলা কলেজে আন্দোলনও হয়, কারণ বিবাহিত কেউ ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিতে পারে না। এখন ফয়সাল ও তার সহযোগীরা শিখাকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন এবং তাকে তালাক দিতে চাপ দিচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে শিখা নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles