
বিখ্যাত পপ তারকা স্টেডম্যান পিয়ারসন ও দুবাইয়ের রাজকন্যা হেসা আল মকতৌমের ভালোবাসার গল্প যেন সিনেমাকেও হার মানায়।
গোপনে বিয়ের পর পরিবারের ভয়ে ‘সিঙ্গেল’ সেজে থাকা আর হঠাৎ একদিন রাজকন্যা হেসা আল মকতৌমের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া- সব মিলিয়ে এক রহস্যঘেরা ভালোবাসা ও বিচ্ছেদের গল্প। স্টেডম্যানের মৃত্যু এই গল্পকে আবার আলোচনায় এনেছে আর এখনো হেসা কোথায় আছেন, জানে না কেউ।
স্টেডম্যান পিয়ারসনের জন্ম ১৯৬৪ সালের জুন মাসে, ইংল্যান্ডে। ভাই-বোন মিলে গড়া ব্যান্ড ‘ফাইভ স্টার’ আশির দশকে জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠে। ব্রিটেনে তাদের গানের অ্যালবাম রেকর্ড বিক্রি হয়। তবে ১৯৮৯ সালে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে ব্যান্ডটি কার্যত ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর স্টেডম্যান আমেরিকায় পাড়ি দেন এবং সংগীতজীবন নতুনভাবে শুরু করেন। এসময়ই তার জীবনে প্রবেশ করেন আরব রাজকন্যা হেসা আল মকতৌম।
জানা যায়, স্টেডম্যান প্রেমে পড়েছিলেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মকতৌম বিন রশিদ আল মকতৌমের কন্যা হেসা আল মকতৌমের। সম্পর্কের কথা পরিবার জানতে পারলে চরম বিপদের আশঙ্কা ছিল, তাই তারা চুপিসারে প্রেম চালিয়ে যান। হেসা মাঝেমধ্যেই দুবাই থেকে ইংল্যান্ডে আসতেন এবং সেখানেই তাদের সম্পর্ক গাঢ় হতে থাকে। অবশেষে ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে তারা ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে একটি সিভিল কোর্টে গোপনে বিয়ে করেন। দুই পরিবারের কেউই এই বিয়ের কথা জানতেন না।
বিয়ের পরেও সম্পর্কের কথা গোপন রাখার কৌশল হিসেবে হেসা ছয় মাস ‘সিঙ্গেল’ সেজে দুবাইয়ে থাকতেন আর ছয় মাস স্টেডম্যানের সঙ্গে সময় কাটাতেন। পরিবারের সদস্যদের তিনি বলতেন, তিনি বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন সিনেমা দেখার জন্য। কিন্তু বাস্তবে এসময় তিনি ছিলেন তার স্বামীর সঙ্গেই। স্টেডম্যানের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গেও হেসার পরিচয় ছিল সীমিত। একই সঙ্গে পরিচয়ের সময়ই সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হতো- এই সম্পর্কের কথা যেন গোপন থাকে।
২০০৬ সালে হেসার বাবা শেখ মকতৌমের মৃত্যু হয়। ২০০৮ সালে হেসা সিদ্ধান্ত নেন তিনি তার ও স্টেডম্যানের সম্পর্কের কথা পরিবার ও জনসমক্ষে জানাবেন। তবে সম্পত্তি ও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি আগে থেকেই আইনি সহায়তা নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই হেসা নিখোঁজ হয়ে যান। স্টেডম্যান এমনকি কোনো থানায় অভিযোগও জানাননি।
গণমাধ্যম সূত্রের খবর- স্টেডম্যান পিয়ারসন নিজেই জানতেন না হেসা কোথায় চলে গিয়েছেন। আর বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার ভয়ে পুরো বিষয়টি চুপচাপ মেনে নিয়েছিলেন। চলতি বছর মার্চ মাসে ৬০ বছর বয়সে স্টেডম্যান পিয়ারসন মারা যান। তার মৃত্যুর পর এই গোপন প্রেমের গল্প আবার সামনে আসে।
কিন্তু আজও হেসা আল মকতৌম কোথায় আছেন, বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন- যেন এক গভীর রহস্য। এক রাজকন্যার ভালোবাসা, লুকিয়ে বিয়ে আর হঠাৎ অন্তর্ধান- এ যেন বাস্তব জীবনের এক অসমাপ্ত প্রেম উপাখ্যান।