20.6 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

মা হওয়ার পর কেন খেলা ছেড়েছিলেন, জানালেন সানিয়া মির্জা

মা হওয়ার পর কেন খেলা ছেড়েছিলেন, জানালেন সানিয়া মির্জা - the Bengali Times
সানিয়া মির্জা ও তার ছেলে

বিশ্ব টেনিস অঙ্গনের অন্যতম আইকনিক নাম সানিয়া মির্জা, যিনি কোর্টে যেমন ঝড় তুলেছেন, তেমনি মাতৃত্বের কোর্টেও যেন আরেক যুদ্ধের যোদ্ধা তিনি। সম্প্রতি এক পডকাস্টে ফ্যাশন আইকন ও উদ্যোক্তা মাসুম মিনাওয়ালার সঙ্গে প্রাণখোলা আলাপচারিতায় সানিয়া তুলে ধরেছেন কেন তিনি খেলার দুনিয়া থেকে সরে দাঁড়ালেন, কীভাবে মাতৃত্ব বদলে দিয়েছে তার জীবন, এবং একজন মা হিসেবে তার মানসিক লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা।

একটি পডকাস্টে মাসুম মিনাওয়ালার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় সানিয়া বলেন, পেশাদার খেলা থেকে সরে আসার অন্যতম বড় কারণ ছিল তার ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছা।

- Advertisement -

তিনি বলেন, ‘আমি সরে এসেছি একটা বড় কারণে, সেটা হলো আমার ছেলের সঙ্গে সময় কাটানো। এখন সে এমন এক বয়সে আছে, যেখানে তার মানসিক স্থিতির জন্য একজন অভিভাবকের উপস্থিতি খুব দরকার। বিশেষ করে স্কুল ও রুটিনে বাধা জীবনের জন্য এটা জরুরি। আমি চাইনি এমন একটা সময় চলে যাক, যেটার জন্য পরে আফসোস করব। আমি অনেক বছর ধরে নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য খেলেছি। মা হওয়াটাও ছিল আমার আরেকটা স্বপ্ন।’

সানিয়া জানান, ছেলেকে ছেড়ে প্রথমবার দূরে যাওয়া তার জীবনের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ মুহূর্তগুলোর একটি ছিল। তিনি বলেন, ‘যখন আমি প্রথমবার ইজহানকে রেখে দিল্লি গিয়েছিলাম, তখন ও মাত্র ছয় সপ্তাহের। সেই ফ্লাইটটা আমার জীবনের সবচেয়ে মানসিকভাবে কষ্টের মুহূর্ত ছিল। আমি ভেঙে পড়েছিলাম, যদিও জানতাম অনেক মা এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যান। তারপরও অপরাধবোধ কাজ করছিল খুব। এটা এখন যাকে ‘মম গিল্ট’ বলা হয়, ঠিক তেমনই অনুভব করছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমি সকালবেলা ফ্লাইট ধরেছিলাম, তখনও ছেলেকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছিলাম। প্লেনে দুধ পাম্প করতে হয়েছে। খুবই ঝামেলার ছিল। তবে আমি কৃতজ্ঞ, কারণ আমি সেটা ঠিকঠাক শেষ করতে পেরেছিলাম। এই সফরটা আমাকে শেখায়, আমি বাইরে গিয়ে আবার ফিরে এলেও সব ঠিক থাকে। এরপর থেকে আলাদা হওয়াগুলো সহজ হয়ে যায়। আমি সেদিনই দিল্লি গিয়ে আবার সন্ধ্যায় ফিরে এসেছিলাম। আমি আর আমার ছেলে – দু’জনই ঠিক ছিলাম, যদিও চোখে পানি ছিল।’

সানিয়ার মা তাকে সাহস দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মা আমাকে বলেছিলেন, ‘তুমি বেশি ভাবছ। সে এখনো ছোট, বুঝতেই পারবে না তুমি নেই।’ এই কথাটাই আমাকে সাহস জুগিয়েছিল।’

গর্ভাবস্থার সময়টা সুন্দর ছিল বললেও, দুধ খাওয়ানোর সময়টা ছিল তার জন্য সবচেয়ে কষ্টকর। সানিয়া বলেন, ‘আমি প্রায় তিন মাস বুকের দুধ খাইয়েছি, কিন্তু মানসিকভাবে খুব কঠিন ছিল। আবার গর্ভবতী হতে আপত্তি নেই, কিন্তু আবার দুধ খাওয়ানো? সেটা ছিল সবচেয়ে কষ্টের। মানসিক চাপ, সময়ের অভাব, ক্লান্তি – সবকিছু একসঙ্গে ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমি আমার পেডিয়াট্রিশিয়ানকে বলি, আমি আর পারছি না। তিনি বলেন, আর এক মাস চালাও। কিন্তু আমি বলি, আমার মানসিক স্থিরতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একজন মানুষের একমাত্র খাদ্যের উৎস হওয়ার চাপ, এটা গর্ভাবস্থার চেয়েও কঠিন ছিল।’

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর, তার ছেলে ইজহান জন্ম নেয়। তার আগের রাতেও সানিয়া টেনিস খেলেছেন। সন্তানের জন্মের মাত্র তিন সপ্তাহ পরেই তিনি আবার ফিটনেস ট্রেনিং শুরু করেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles