
“দেশের নাম বাংলাদেশ আর মানুষের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।”…হাবিবুল্লাহ সিরাজী
সেই মানুষ নামের এক নক্ষত্র আজ ঝরে গেলো। টরন্টোতে আমরা তাঁকে কাছে পেয়েছিলাম। তাঁর একুশে পদক প্রাপ্তি উপলক্ষে ক্বণন সংগঠন থেকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল। খুবই অন্তরঙ্গ সময় ছিল আমাদের। আজ তাঁর বিদায় ক্ষণে মনে পড়ছে সেসব কথা। এর পরেও বাংলা একাডেমিতে, একুশের বইমেলায় দেখা হয়েছে। তবে সেদিনের স্মৃতিটা বড় বেশি অম্লান। সেই স্মৃতির কিছু অংশ তুলে ধরছি।
“গেলো ১৭ই সেপ্টম্বর সাংস্কৃতিক সংগঠন ক্বণন এবং পয়েম ওয়ার্ল্ডের যৌথ আয়োজনে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা টরন্টো ড্যানফোর্থে বাংলাদেশ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হলো কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘২০১৬ একুশে পদক’ প্রাপ্তি উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং ড. মোজাম্মেল খানের দ্বিতীয় গ্রন্থ “প্রবাস থেকে দেখা বাংলাদেশের রাজনীতি”র প্রকাশনা উৎসব। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীর সম্বোর্ধনা অনুষ্ঠান।
কবির প্রতি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লেখিকা তাসরীনা শিখা। কবি এবং কবিতার প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোকপাত করেন গদ্যকার সুব্রত কুমার দাস। তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ষাটের দশকের শেষার্ধে আবির্ভূত কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী মুক্তিযুদ্ধ ও আধুনিক বাঙালির সাম্প্রতিকতম বিবর্তনে নিজস্ব কাব্যধারা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন এবং তাঁর কবিতা সমাজ-ইতিহাস-সমকালের নান্দনিক সাক্ষী বটে। সুব্রত কুমার দাস আরো উল্লেখ করেন, স্বাধীনতা পরবর্তী কবির কাব্যচর্চার উওরণের সময় সহযাত্রী ছিলেন অনেক প্রথিতযশা কবি, যাদের কারণে আজ বাংলাদেশের বাংলা সাহিত্য ঋদ্ধ ও শক্তিমান হয়েছে এবং সেই সাথে বাংলা সাহিত্যকে এনে দিয়েছেন নিজস্ব এক ধারায়; তাঁদের মধ্যে উল্লেখ্যোগ্য ছিলেন কবি শামসুর রহমান, কবি শহীদ কাদরী, কবি রফিক আজাদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি নিজেও বক্তব্য রাখেন,যেখানে তুলে ধরেন বর্তমান বাংলাদেশের সামাজিক রাজনৈতিক বৈপরীত্য; নিজের কবিতার অংশ উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,” ইতিহাস যখন নষ্ট হয়ে যায়, তখন মানষও নষ্ট হয়ে যায়”। কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীকে টরন্টোবাসী কাছে পেয়ে ধন্য এবং তাঁর একুশে পদকপ্রাপ্তিতে আমরা সকলে গর্বিত। ক্বণন এবং পয়েম ওয়ার্ল্ডের এমন আয়োজনে কবির সান্নিধ্য পুরো অনুষ্ঠানের পূর্ণতা এবং মাহাত্ম্য এনে দিয়েছে। এই পর্বে কবির কবিতা আবৃত্তি ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মাহমুদ হাসান বাবু ও আঞ্জুমান রোজী।”
আজ কবির অনন্ত যাত্রায় গভীর শ্রদ্ধাভরে অবনত মস্তকে বিদায় জানাই।
টরন্টো, কানাডা