
প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলাম পুলিশের হাতে এখন বন্দী। শোনা যাচ্ছে তাঁকে পুলিশী রিমান্ডে নেয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করতে যেয়ে প্রথমে আমলাদের দ্বারা শারিরীকভাবে আক্রান্ত হন ও পরে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। মজার ব্যাপার হল, এ ক্ষেত্রে হেফাজতি নেতা মামুনুল হক আর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। রোজিনা ইসলামের পক্ষে সাংবাদিকদের তেমন কোন প্রতিবাদও চোখে পড়ছে না। যদিও মামুনুল হকের পক্ষে হেফাজতিরা কিছু আন্দোলন করেছিল।
তবে সাংবাদিক ও জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হকের একটি কান্নার ছবি ফেসবুকে ঘুরছে। কারন তিনি জানেন এ রকম কান্নাকাটি করে যদি সরকার প্রধানের মনটা গলানো যায়, তাহলে হয়ত রোজিনা ইসলাম ছাড়া পেতে পারেন। অথবা তিনি সত্যিই নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি, ফলে কেদে ফেলেছেন। রোজিনা ইসলামের বস হিসেবে এ ছাড়া তার আপাতত: কিছু করার নেই। কারন তার কান্দেও রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের এক ছাত্র হত্যার অভিযোগে মামলা ঝুলছে। আনিসুল হক ও মতিউর রহমানরা হয়ত মনে করছেন, আন্দোলন করে কোন কাজ হবেনা। আর আন্দোলন করার সাংবাদিক সমাজ কোথায়। সবাইতো বন্দী। কেউ সুবিধার কাছে আর কেউ ভয়ে। রোজিনাকে ছাড়ার জন্য সরকার প্রধানের ইচ্ছা ও অনিচ্ছাই মুলত: আসল। এটা বোঝাই যাচ্ছে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন কাজ আওয়ামীলীগ সরকার করবে না। কারন সরকার প্রশাসনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে একজন রোজিনা ইসলাম কোন ব্যাপার না। সে যত বড় সাংবাদিকই হোক না কেন?
আমরা কিছু লোক রোজিনা ইসলামের মত সাংবাদিকদের ভালোবাসি, কারন তাঁরা দেশটাকে ভালোবেসে সত্যটা বলার চেষ্টা করেন। যদিও আমাদের এ প্রতিবাদ সরকারের কাছে নস্যি। তারপরেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কনা মিলেও তো মহাসমুদ্রের সৃষ্টি হয়। এটাই আশা। আমাদের দাবী, রোজিনা ইসলাম কে মুক্তি দিয়ে তার মেয়ের কাছে পরিবারের কাছে যেতে দেয়া হোক। সে যদি অন্যায় করেই থাকে আদালতে তার বিচার কার্যক্রম চলুক।
বাংলাদেশের যে সমস্ত সাংবাদিককে কিছু সুযোগসুবিধা (মানে দালালী করার ক্ষমতা) দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছে এবং বাকি যারা ভয়ে সত্যটা লিখতে সাহস পাননা তাদের একটু সোচ্চার হওয়া উচিৎ। তাহলে কিছুটা পবির্তন আসতেও পারে। আপনারা তখন নিরাপদে আপনাদের পেশা চালিয়ে যেতে পারবেন। আপনাদের পেশাগত স্বার্থেই রোজিনা ইসলামদের মুক্ত রাখা টা খুব দরকার। নইলে এক সময় বাংলাদেশে সাংবাদিকতাই থাকবে না। তখন বালু সাপ্লাই এর ব্যবসাও করে খেতে পারবেন না।
টরন্টো, কানাডা