
অনেকে বলবেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। আমাদের দেশে নড়ে না! কারণ ? বাতাস প্রায়শ দূর্বল? না, তা নয়। বাতাসকে ঘুড়িয়ে দেয়া হয় যাতে অই ধর্মের কল পর্যন্ত পৌঁছুতে না পারে। তবে মাঝেমধ্যে কালোবোশেখীর দাপট তীব্র হলে কথা আলাদা। ব্যাখায় পড়ে যাচ্ছি, আগে বলে নিচ্ছি একটি দিনের ঘটনা। ২০১০ এর জানুয়ারী মাস। যথানিয়মে আমি ঢাকায়, আছি সর্বজনশ্রদ্ধেয় সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের আশ্রয়ে। ফলে বইমেলার বাইরে এখানে ওখানে যাওয়া, তাঁর কল্যানে অনেক অনেক বিখ্যাত লোককে কাছ থেকে দেখাÑ এ আমার জন্যে যেন এক উপরি পাওনা। যেমন, অনামন্ত্রিত হয়েও এক বিয়ের পার্টিতে গিয়ে আমার পাশের চেয়ারে দেখি, বসে আছেন যায় যায় দিন’খ্যাত ‘রিপু কাহিনী’র শফিক রেহমান, অবভিয়াসÑ স্যুটেড বুটেড! আহা, কতো যুগপর খুব কাছ থেকে দেখলাম এই ‘গোলাপ-সুন্দর’কে!
এক দুপুরে সারওয়ার ভাইয়ের সঙ্গে গেলাম সিএমএইচ এ। যাবার আগে ‘সাংবাদিক’ লেখা ষ্টিকার গাড়ি থেকে খুলে ফেলা হল। কারণ, ক্যান্টনমেন্ট একটি অত্যন্ত সংরক্ষিত এলাকা আর এই এলাকায় সাংবাদিক ষ্টিকারযুক্ত গাড়ির প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ তা যতবড় সাংবাদিক সম্পাদকের গাড়িই হোক না কেন। যাক এসব ‘অতি-সেনসেটিভ’ বিষয় নিয়ে কথা না বলাই ভালো। মুল ঘটনায় আসি। সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাকে দেখতে সামরিক হাসপাতালে আসা। হঠাৎ হার্টের সমস্যা হওয়ায় তাঁকে যশোর থেকে সেনা হেলিকপ্টারে ঢাকা নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানেই পরিচয় অই সেনা কর্মকর্তার মেয়ের জামাই তরুন এক মেজরের সঙ্গে। আমরা হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম, কথার এক পর্যায়ে দূর্নীতি নিয়ে কথা উঠলো। উঠে এলো আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশের তাবৎ দূর্নীতিবাজ যেন প্রধাণ দলগুলোর ভিতর বাসা বাধা মৌচাকের মৌমাছি। আমাদের দেশের সেনা বাহিনীর ভাইজানরা কথায় কথায় সাধারন মানুষদের ‘বøাডি সিভিলিয়ান’ বলতে অভ্যস্ত হলেও সবাই যে এক কাতারের নন আর প্রমান এই তরুণ মেজর। যেন এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। আমি বলার চেষ্টা করলাম, বামপন্থীরা এখনো অনেক বেটার। হাসলেন তরুণ মেজর। বিনীতভাবে বললেন, ‘আপনিতো দেশে থাকেন নাÑ হয়তো পুরো তথ্য আপনার জানা নেই। একসময় আমার কর্মস্থল ছিল সিলেটের হাওর এলাকা। গিয়ে দেখি, যাকে একসময় খুব শ্রদ্ধা করতাম খুবই অসৎ মানুষ তিনি।
আমি কোনোদিন ভাবিনি, আমার বিশ্বাস এভাবে ভুল প্রমানীত হবার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে।