
আমরা প্রতিবছর গরুছাগল কোরবানী দেই প্রকাশ্যে জনসমুখে। ছোট ছোট বাচ্চাদের সামনেই। ইসলামের বিধান অনুযায়ী আমরা ফরজ পালন করি। এভাবে আমরা আল্লাহকে রাজীখুশি করি। গরু-ছাগল জবাই করে আমরা বড়রা ও বাচ্চাকাচ্চারা মিলে পশুহত্যাকে সেলিব্রেট করি। জানি, কেউ কেউ অবশ্য এটা নিয়ে প্রচন্ড আপত্ত্বি করবেন। তাতে কোন অসুবিধা নেই। আপত্ত্বি করতেই পারেন। তবে চেষ্টা করলে বাচ্চাদের অনুপস্থিতে/অগোচরে গরুছাগল জবাই করা বা কোরবানী দেয়া সম্ভব।
আমরা মোরগ-মুরগী ধরে হুটহাট করে ছোটছোট বাচ্চাদের সামনেই জবাই করে ফেলি। এতেও আমাদের কোন বিকার নেই।
বাবামা যখন খুশি তখন তাদের বাচ্চাদের পিটায়, আমরা অনেকে দাড়াইয়া দাড়াইয়া দেখি। কিছু বলিনা। চিন্তা করি, তাদের বাচ্চাকে তারা পিটাচ্ছে আমার কী? কোন করুনা বা ভয় মনে আসেনা।
পাশের বাড়িতে একজনের বউকে সে লাঠি দিয়ে পিটাচ্ছে; আমরা কিছু বলিনা। তার বউকে সে পিটাচ্ছে আমার কী?
ছোটবেলায় দেখতাম, চোরকে ধরে গাছের সাথে বেধেঁ পিটানো হত। এখনো মাঝে মাঝে ঘটে। ফেসবুকের কল্যাণে দেখি। ছোটবেলায় এগুলো দেখে খুব মজা লাগত!
ছোটবেলা থেকে এগুলো দেখে বড় হয়েছি। নিষ্ঠুরতা ছোট বেলা থেকে শিখেছি। কাজেই নিষ্ঠুরতা আমার মজ্জাগত। কোন নিষ্ঠুরতা আমাকে আর কাঁদায় না!
হয়ত এজন্য গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে শ্রমিক পুড়ে মরে গেলে মনে কোন দাগ কাটেনা; আবার রানাপ্লাজায় কয়েক হাজার শ্রমিক আটকা পড়ে মারা গেলেও খারাপ লাগেনা। কারন আমার কাছের কেউ আটকা পড়ে নাই; তাই আমার তেমন কোন অনুভূতি নেই।
লন্চ দুর্ঘটনায় পাঁচশ লোক মারা গেলেও আমার অনুভুতিতে কোন আঘাত করেনা।
আর এজন্যই সম্প্রতি নারায়নগঞ্জে জুস ফ্যাক্টরিতে ৬০জন শ্রমিক পুড়ে মরেছে সেজন্য আমার কোন হাহাকারের অনুভূতি নেই। আমার এ ভোতা অনুভূতিগুলো আমার অর্জিত।
টরন্টো, কানাডা