
“আহারে, নাকটা যদি আরো একটু ছোট আর খাড়া হত।”
“আর যদি দুই ইঞ্চি বেশী লম্বা হতে পারতাম।”
“হাতপায়ের নখগুলো যদি আর একটু বড় আর গোলগোল হত !”
“চুলগুলো যদি আর একটু বেশী লম্বা আর ঘন হত!”
“গায়ের রংটা যদি আর একটু ফরসা হত!”
পৃথিবীতে মনে হয় এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যিনি তার শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
তবে যারা নিজের শারীরিক সৌন্দর্য (Body Image) নিয়ে খুব বেশী অসন্তুষ্ঠ থাকেন তারা আসলে মানসিক রোগে ভুগছেন। এ রোগকে বলা হয় বডি ডিসমরফিক ডিজ ওর্ডার।
এ রোগে যারা ভোগেন তারা খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দেন বা বাড়াইয়া দেন। তারা অন্যান্য মানসিক রোগেও ভোগেন।এনজাইটি ও ডিপ্রেশন কমন। আপনি যদি এ জ্বালায় জ্বলে থাকেন তাহলে আপনি ভাববেন আপনি একা নন।
আমেরিকাতে ৫৫ শতাংশ নারী ও ৪২ শতাংশ পুরুষ নিজের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন।
তাহলে এ সমস্যার ফলাফল কী। এতে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। রিলেশনশিপ নষ্ট হয়। অন্যান্য মানসিক রোগ মনে বাসা বাধে।
তাহলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রানের উপায় কী?
উপায় আছে। ধরুন, আপনি নাক নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তখন সাথে মনে করুন যে, আমার চুলগুলো খুব সুন্দর।
আবার চুল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।তখন মনে করতে হবে যে আপনার চোখগুলো খুব সুন্দর। অর্থাৎ নিজের সুন্দর অঙ্গগুলো নিয়ে মনে মনে গর্ববোধ করতে থাকলে যেগুলো নিয়ে আপনি দুশ্চিন্তা সেগুলো ধীরে ধীরে ভুলে যাবেন।
দ্বিতীয়ত: আপনার শরীরের অঙ্গগুলোর কাজ সম্পর্কে চিন্তা করুন। যেমন, নাক দিয়ে নি:স্বাস নেন, যার ফলে আপনি বেচে আছেন। পা দিয়ে হাটেন; দাঁত দিয়ে খাবার খান, হাত দিয়ে অনেক কাজ করেন। এভাবে চিন্তা করলে সৌন্দর্যের জন্য যে অনুতাপ সেগুলো কমে যাবে।
তৃতীয়ত: যে সমস্ত মিডিয়াতে শুধুমাত্র মানুষের সৌন্দর্যকে মডেলিং করা হয় সেগুলো বর্জন করা। যাতে মনের মধ্যে তুলনার ভাবটা কম আসে।
চতুর্থত: জীবনের লক্ষ্য ঠিক করুন। আপনি আসলে জীবনে কী চান। সেদিকে মনোনিবেশ করুন। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য চেষ্টা চালাতে থাকুন।দেখবেন নিজের দেহের সৌন্দর্যের কথা ভুলে গেছেন।
তারপরেও মন থেকে সৌন্দর্যের দুশ্চিন্তা দুর করতে না পারলে প্রফেশনালদের/ মনোচিকিৎকদের পরামর্শ নিন। কারন সুস্থ্য থাকতে না পারলে সৌন্দর্য ও জীবন দুটোই অর্থহীন।
টরন্টো, কানাডা