
কিছুদিন ধরে একের পর এক জাম্বো সাইজের গদ্য পোস্ট করে করে আমি টায়ার্ড করে ফেলেছি পাঠক বন্ধুদের। একটা ছড়া না হলে আর চলছে না।
লেখার ফাইলের ভেতরে ভিড় ভাট্টায় দেখলাম পড়ে আছে এই ছড়াটা, এ বছরের জানুয়ারিতে লেখা।
ছড়াটার বিষয়বস্তুর ভেতরে যে চরিত্রটা চিত্রিত হয়েছে সেটা কোনো নির্দিষ্ট একজনের নয়। পরিবারে, সমাজে, প্রতিষ্ঠানে,রাষ্ট্রে–আমাদের চারপাশে এই চরিত্ররা দৃশ্যমান। ছড়াটা পড়ার সময় কিংবা পড়ার পর একেকজন পাঠকের সামনে একেকটা চরিত্র মূর্ত হয়ে উঠবে। এটাই এই ছড়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং মজা।
আজকে দিলাম ঝেরে সেই ছড়াটাই–
যখনই নিজেকে ঈশ্বর ভাবো পতন তখনই শুরু
লুৎফর রহমান রিটন
ক্ষমতা এবং টাকার দম্ভে অন্যকে ভাবো তুচ্ছ
কাক ছিলে আগে কিন্তু লাঙুলে লাগিয়ে ময়ূরপুচ্ছ–
সেজেছো ময়ূর। কিন্তু স্বভাবে থেকে গেছো সেই কাকটাই!
পরনে যতোই শাদা পাঞ্জাবি-স্যুট-বুট-শার্ট থাক-টাই
যতোই নিজেকে দাবি করো তুমি অভিজাত শ্রেণি, ব্রাহ্ম–
ব্রাণ্ডের দামি জামার আড়ালে থেকে গেছো তবু গ্রাম্য!
দর্পণে তুমি দেখো না নিজের সত্যিকারের হালটা
সারা দেহ জুড়ে মুখমণ্ডলে চড়িয়ে বাঘের ছালটা
বাঘ সাজলেও তোমার হালুমে আসে না বাঘের গর্জন
প্রশ্নের মুখে পরে যেতে পারে তোমার সকল অর্জন।
সব হয়ে যেতো চোখের পলকে তোমার একটু ইশারায়–
ছিলো কতিপয় যারা ক্ষণে ক্ষণে চাটুকারিতায় দিশ হারায়,
তাদের জিন্দাবাদের ধ্বনিতে চাপা পড়ে যেতে প্রায়শঃ
তোমার ময়ূরপুচ্ছ ধারণে লজ্জিত হতো বায়সও।
যখনই নিজেকে ঈশ্বর ভাবো পতনের শুরু যাত্রা
চিরকাল থাকে পদ-পদবী ও টাকার সমান মাত্রা?
থাকে না থাকে না, ছিলো না কখনো, থাকে না থাকে না থাকে না
তোমার মতোন দাম্ভিক সেটা কোনোদিনই মনে রাখে না।
পতনের কালে কাউকে পাবে না যারা ছিলো তব ঘিরিয়া
উড়াল পঙ্খী উড়িয়া যাইবে আসিবে না কভু ফিরিয়া…
অটোয়া, কানাডা