
ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার পরও কাউকে মেয়াদ পুর্তির আগেই আবার ভোট দিয়েই তাকে অপসারণ করা যায়, আন্দোলন, সংগ্রাম, সামরিক ক্যু বা ভিন্ন পথ অবলম্বন করার দরকার হয় না কোন গণতান্ত্রিক দেশে। তার নাম রিকল ইলেকশন।
সবাই জানি আমরা গনতন্ত্রের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো নির্বাচন। সবাই জানে সে কথা। কিন্তু কয়জন জানে যে বিপুল ভোটে নির্বাচিত লোকটিকেও তার মেয়াদ পুর্তির আগেই আবার রিকল ভোটের মাধ্যমে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া যায়?
সামান্যতম যারা গনতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদের উচিত আমেরিকার বৃহত্তম রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচিত গভর্নর, ডেমোক্রেটিক পার্টির গ্যাভিন ক্রিস্টোফার নিউসোমের আজকের রিকল ভোটের ফলাফলের উপর চোখ রাখা।
চার বছর মেয়াদের জন্য ২০১৯ সালের জানুয়ারীতে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন মি: নিউসোম। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতেই তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেবার জন্য রিকল পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। দেশের আভ্যন্তরিন নানান ইস্যুতে অসন্তুষ্ট ভোটাররা এই পিটিশন দাখিল করেছিল। পিটিশন দাখিল করতে ১৪ লক্ষ ৯৫ হাজার ন্যুনতম ভোটারের স্বাক্ষর দরকার ছিল। দরখাস্তে স্বাক্ষর করেছিল ১৬ লক্ষ মানুষ। অবশ্যই এটা সংগঠিত করেছিল বিরোধী রিপাবলিকান পার্টি।
আজ সেখানে ভোট হয়েছে। ভোটের ফলাফলে না ভোট জয়ী হতে চলেছে। অর্থাৎ বর্তমান গভর্নর তার পদে বহাল থেকে যাচ্ছেন।
আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে জনগনের অসন্তুষ্টি ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপর। কাজেই সেটার একটা প্রকৃত চিত্র পেতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনও ক্যালিফোর্নিয়া গিয়ে তার দলের বর্তমান গভর্নরের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। কারণ গভর্নর পরাজিত হলে বাইডেনের উপর চাপ আসার সম্ভাবনা ছিল।
সারমর্ম হলো, গনতন্ত্র বহাল ও শক্তিশালী থাকলে জনগনের কোন ভয় থাকে না। কাউকে ভোট দিলেও মালিকানা তাদের হাতেই থেকে যায়। ভোট দিয়ে জয়ী করার পরেও পুনরায় ভোট দিয়ে কিছুদিন পরেই আবার তাকে সরিয়ে দেয়া যায়।
জনগনের শাসনের এর চেয়ে ভাল পদ্ধতি আর কি হতে পারে? যদি গনতন্ত্র থাকে।
স্কারবোরো, টরন্টো