
সংক্রমণ থামাতে প্রদেশগুলো মহামারির কোনো এক সময় ভ্যাকসিনেশন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে বলে প্রত্যাশা করেন কানাডার স্বাস্থ্যমন্ত্রী। শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জঁ-ইভস ডুকলো বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপের কথা কানাডা এই মুহূর্তে ভাবছে না। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, কানাডা কোনো এক সময় এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। আমরা জানি যে, কোভিড-১৯ সামনের আরও অনেক মাস আমাদের সঙ্গে থাকবে।
কানাডার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও বয়স্ক জনসংখ্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে প্রদেশগুলো বিস্তৃত পরিসরে ভ্যাকসিনেশন বাধ্যতামূলক করার কথা ভাববে। তবে এটা একান্তই তাদের সিদ্ধান্ত।
ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও পরীক্ষার ওপর জোর দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি যে, কোভিড-১৯ মহামারি, এই ভ্যারিয়েন্ট এবং ভবিষ্যতের কোনো ভ্যারিয়েন্টের মধ্য দিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ভ্যাকসিনেশন।
ভ্যাকসিনের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ব্যাপকহারে হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টিও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কানাডার জনস্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি কানাডার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীদের ৭৯ শতাংশই
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেন নি। জনস্বাস্থ্য বিভাগের ৭ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপাত্ত বলছে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ১২ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির হার ২৫ গুন বেশি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটা স্বাস্থ্যকর্মী ও সমাজের ওপর একটা বোঝা, যা বহন করা ও অনেকের পক্ষেই অনুধাবন করাটা কঠিন।
ইতালি বুধবার ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করেছে। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ ও মৃত্যুহার কমানোর লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। ফ্রান্সও ভ্যাকসিনের বাইরে থাকা লোকদের ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ভ্যাকসিনের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের রেস্তারাঁ, ক্যাফে, সিনেমা ও থিয়েটারে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছেন।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ সংবাদ ব্রিফিংয়ের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাধ্যতামূলত ভ্যাকসিনেশনের ধারণা বাতিল করে দিয়েছেন আলবার্টার প্রিমিয়ার জেসন কেনি। ভ্যাকসিনেশনে উৎসাহিত করে এখনও এটাকে জনগণের ইচ্ছাধিন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
জেসন কেনি বলেন, জনস্বাস্থ্য আইন থেকে বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনেশনের বিষয়টি গত বছরই বাদ দিয়েছে আলবার্টার আইনসভা। সেটা আর ফিরিয়ে আনা হবে না।
ভ্যাকসিন সনদের ব্যাপারে গত গ্রীষ্মেও একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন জেসন কেনি। তবে সেপ্টেম্বরে সে ঘোষণা থেকে তিনি সরে আসেন এবং সংক্রমণ থামাতে পরিবর্তিত ভ্যাকসিন সনদ ব্যবস্থা চালু করেন।
কেনির মতোই একই মন্তব্য করেছেন সাস্কেচুয়ানের প্রিমিয়ার স্কট মো। শুক্রবার বিকালে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আপনাকে ও আপনার পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা আপনার একান্তই নিজস্ব সিদ্ধান্ত এবং সাস্কেচুয়ান সরকার এটা কারও ওপর চাপিয়ে দেবে না।