
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে ডিভিশন বাতিল করে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। কনডেম সেলে পুলিশের সাবেক এই দুই পরিদর্শক নির্বিকার সময় কাটাচ্ছেন।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) মো. নেছার আলম জানিয়েছেন, সোমবার আদালতের রায় ঘোষণার পর দণ্ডিত আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর রাতেই তাঁদের কনডেম সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি জানান, বিজ্ঞ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার পরই তাঁদের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও বাতিল করা হয়েছে।
কারাগারের ওয়ার্ড থেকে কনডেম সেলে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মমাফিক তাঁদের দুজনকে কারা পোশাক পরানো হয়েছে। তাঁদের যথারীতি সরবরাহ করা হচ্ছে বন্দিদের খাবার মাছ, সবজি ও সাদা ভাত।
কারাগারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কনডেম সেলে তাঁদের চোখে চোখে রাখা হয়েছে। দণ্ডিত পুলিশের দুই কর্মকর্তাই রয়েছেন একদম নীরব।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের কারাগারে বন্দিদের শতকরা ৮০ জনই হচ্ছেন মাদক মামলার আসামি। মাত্র ৫৬০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কারাগারটিতে বর্তমানে আটক রয়েছেন চার হাজারেরও বেশি কারাবন্দি। বন্দিরা গতকাল (সোমবার) সকালেই কারাভ্যন্তরে জানতে পারেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ে ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের ফাঁসি এবং আরো ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের খবর। রায়ের খবর শুনে বন্দিদের বেশির ভাগই উল্লসিত।
সোমবার কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল সিনহা হত্যা মামলার রায়ে প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড এবং আরো ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হচ্ছেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক নন্দদুলাল রক্ষিত, টেকনাফ থানার কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও কনস্টেবল সাগর দেব এবং পুলিশের তথ্যদাতা বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াছ ও মো. নিজাম উদ্দিন। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।