
ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান
ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আত্মহত্যার মাত্র দুই দিন আগেই পিস্তলের লাইসেন্স নবায়ন করান তিনি।
নিজের মাথায় গুলি করার আগে পিস্তলটি বৈধ প্রমাণে ফেসবুক লাইভে লাইসেন্স প্রদর্শন করেন আবু মহসিন খান। তিনি বলেন, ‘আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে।’
সেই লাইভে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা শুরু করে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের প্রতি অভিমান প্রকাশ করেন তিনি। কারা তাকে ঠকিয়েছে সেই বিষয়টিও তুলে ধরেন। মহসিন বলেন, ‘পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামিলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামিলি অনেকসময় বুঝতে চায় না। আমি বিভিন্ন লোকজনের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পাই। কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও সে টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। যাদের ভালোর জন্য আমি করেছি, তাদের সবার কাছেই আমি প্রতারিত হয়েছি। মানুষ অন্যের টাকা কেন ছলচাতুরি করে নিয়ে যায়? আমি তো কারও টাকা নিইনি। পারলে মানুষের উপকার করেছি, না পারলে আশপাশে যাইনি। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে এটাই শেষ দেখা। সবাই ভালো থাকবেন।’ এরপর দুইবার কলেমা পড়ে নিজের মাথায় গুলি করেন তিনি।
লাইভে কথা বলার সময় তার সামনে টেবিলে কাফনের কাপড় রাখা ছিল। তার ওপর একটি চিরকুটে লেখা- ‘এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে; যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম।’
ধানমন্ডির সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ আল মাসুম জানিয়েছেন, আবু মহসিন খান ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আত্মহনন করেছেন। মাত্র দুদিন আগেই পিস্তলের লাইসেন্স নবায়ন করেন তিনি। ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অপমৃত্যুর মামলা করেছে তার পরিবার।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মহসিন খানের মরদেহের পাশে একটি নোট পাওয়া গেছে। সেখানেও তিনি একই ধরনের কথা লিখেছেন।
এদিকে শ্বশুরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তার শ্বশুরের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। নায়ক জানিয়েছেন, ‘আপনারা আমার বাবার (শ্বশুর) জন্য দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন। বেহেশত নসিব করেন। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারছি না।’