নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটি ঘোষণা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ভোট চুরির প্রজেক্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘সার্চ কমিটি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সংশ্লিষ্টতা নেই। জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে আসবে না এমন সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি ভাবছে না।’
আজ শনিবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করতে হবে।
বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় জানায় বিএনপি। সেখানে সার্চ কমিটি নিয়ে নিজেদের দলীয় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি নেতারা।
এসময় দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান টুকু বলেন, ‘আমরা মনে করি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সার্চ কমিটি হোক আর যেই নির্বাচন কমিশনই হোক, এই সরকার থাকলে আমরা কোনো নির্বাচনে যাবো না।’
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সার্চ কমিটি হলো মানুষকে বিভ্রান্ত করা। দলনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন কোনোটাই নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। এটা লোক দেখানো সার্চ কমিটি ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যায় না।’
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, পাবলিক সার্ভিস কমিশন-পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন ও অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
এ সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন কমিশন গঠন আইনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে সার্চ কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় সংলাপ। প্রায় প্রতিটি দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তবে বিএনপি ও সিপিবিসহ বেশ কিছু দল সংলাপে অংশ নেয়নি।
সূত্র: আমাদের সময়