
নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান তিনটি দলই আবাসনের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। বিদেশি ক্রেতাদের কানাডায় বাড়ি কেনার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলা হচ্ছে। কানাডার বাইরের নাগরিকদের বাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে এনডিপি। তবে লিবারেল ও কনজার্ভেটিব পার্টি উভয়েই আগামী দুই বছরের জন্য বিদেশিদের বাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এছাড়া এনডিপি আগামী ১০ বছরে নতুন করে ৫ লাখ সাশ্রয়ী বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কনজার্ভেটিভ পার্টি মাত্র তিন বছরে বানাতে চায় ১০ লাখ সাশ্রয়ী বাড়ি। আর লিবারেল পার্টি আগামী চার বছরে ১৪ লাখ বাড়ি নির্মাণ, সংরক্ষণ ও মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার অন্টারিওর উইন্ডসরে প্রচারণায় গিয়ে এনডিপি নেতা জাগমিত সিং মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিল কমাতে বাধ্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, জাস্টিন ট্রুডো ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে সেলফোন বিল ২৫ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও উল্টো বেড়েছে। তবে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার পরিসংখ্যান উল্লেখ করে লিবারেল পার্টির দাবি, ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সেলফোন ব্যবহারের খরচ ২১ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কানাডার রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের পকেটবুককেই তাদের প্রধান এজেন্ডা হিসেবে মনে করছে। এর অংশ হিসেবে তারা আবাসন থেকে শুরু করে খাদ্য ও সেলফোনের বিল কমানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ক্রয় ক্ষমতার বিষয়টি মহামারির আগেই কানাডিয়ানদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছিল। কোভিড-১৯ লকডাউন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘœ পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। বিশেষ করে আবাসন বাজারকে উত্তপ্ত করে তুলেছে মহামারি। অধিকাংশ কানাডিয়ান এখন আগের চেয়েও বড় বাড়ি চাইছেন। তরুণ কানাডিয়ান ও নি¤œ আয়ের মানুষদের মধ্যে মহামারির আগে বাড়ির মালিক হওয়ার যে স্বপ্নটা ছিল মহামারি তা নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে।
জুলাই মাসে মুল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। গত দুই দশকের মধ্যে তা সর্বোচ্চ। খাদ্য ও জ¦ালানির দাম বৃদ্ধি এজন্য আংশিক দায়ী। অর্থনৈতিক কর্মকা- খুলে দেওয়ার ফলে চাহিদা বৃদ্ধি ও সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘেœর কারণেই মূলত দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে মহামারি যেসমন সম্পৃক্ত একইভাবে সম্পৃক্ত জলবায়ু পরিবর্তনও। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকাটি রেখেছে বাড়ির দাম বৃদ্ধি।
কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাড়ির গড় দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। এ অবস্থায় কনজার্ভেটিভ পার্টির নেতা এরিন ও’টুলের বক্তব্য, কানাডা এখন জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে।
সরবরাহ ঘাটতিকেই বাড়ির দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। টরন্টোর রায়ারসন ইউনিভার্সিটির রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক মুর্তজা হায়দার বলেন, আমার মত হচ্ছে, গত পাঁচ দশকে দরকারের চেয়ে কম বাড়ি নির্মিত হয়েছে কানাডায়।