
ডিম ভাজতে পারেন, তাইতো? খু-উ-উ-ব ভালো!
পোলাপান, তালিয়া..। ঘটনা হলো, সব মানুষই গোসল করতে পারে, কিন্তু কাউকে দেখবেন কানের মধ্যে ফেনা নিয়ে বাথরুম থেকে বের হচ্ছে; কারোর কানের লতির উপর চুলই ভিজে নাই। অনেক ফাঁকিবাজ তো কোনাকাঞ্চি ক্লিন না করেই বলে গোসল শেষ। মনে রাখবেন, চড়ুই পাখিও গোসল করতে পারে।
উপকরণ:
১. ব্রয়লার মুরগির ডিম একটা
২. Made in Bangladesh ছোট ঝাঁঝালো পেঁয়াজ একটা
৩. কাঁচা মরিচ বড় একটা, Made in Bogura হলে ভালো
৪. সয়াবিন তেল দুই চা চামচ
৫. সামুদ্রিক লবন এক চিমটি
৬. কড়াই/প্যান, খুন্তি
প্রণালী:
মনে রাখবেন ডিম ভাজি কিন্তু দুই প্রকারের:
১. ডলা: কাঁচা মরিচ, লবন, পিঁয়াজ আচ্ছামত ডোলে নিয়ে ডিম ভাজা
২. রেগুলার: উপকরণ না ডোলে একসাথে গুলিয়ে ভাজা।
প্রথমটায় কাঁচা মরিচ আর পিঁয়াজের ফ্লেভারে টইটম্বুর থাকে। আর দ্বিতীয়টায় ডিমের ফ্লেভারই মুখ্য। দাওয়াতে খাবার টেবিলে ডিম ভাজা থাকলে নিবেন সবার আগে। তা না হলে পেটুকরা সব সাবাড় করে ছোট্ট এক পিস দয়া করে রেখে দেবে। পাতলা রুটি সাইজের বিশাল ডিম ভাজির প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে ছোট পেটমোটাটা নিবেন; ঠকবেন না।
আপনাদের আপন মনে করে একটা দুঃখের কথা শুনাই। জীবনে হাউশ ছিল আস্ত একটা উটপাখির ডিম ভেজে খাওয়া। যে ডিমে থাকবে এক পোয়া ঝাঁঝালো দেশি পিঁয়াজ, দশটা বগুড়ার ঝাল মরিচ, আধা চা চামচ লবন। সাথে থাকবে সাদা ধবধবে ময়দার টোপা টোপা তিন-চারটা লুচি। পাঠকরা, কেউ উটপাখির ডিমের খোঁজ পেলে জানায়েন তো?
উপকরণগুলা [তেল বাদে] একসাথে মিশিয়ে চামচ দিয়ে ভালমত ঘুঁটা দেবেন। তারপর মিডিয়াম আঁচে ভেজে ফেলুন, ডিম ভাজি তৈরী!
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সবাই ঠিকমত ডিম ভাঙতে পারে না। কেউ ডিমের খোসাশুদ্ধ ভাজে। কেউ আবার ডিম এমন জায়গায় রাখে, লবণের কৌটা নামাতে গিয়ে এসে দেখে ডিম গড়িয়ে মেঝেতে পড়ে একাকার। আর কিছু বোকা মানুষ ডিম কিনবে আগে; তারপর আলু, মিষ্টিকুমড়া। বাসায় এসে খাবে বউয়ের গালি। তাই ডিম কিনবেন সবার শেষে, রিকশায় ওঠার আগে।
ডিম দিয়ে সকালের বেস্ট মেন্যু: শীতকালে ফ্রিজে কিছুটা বাসি হয়ে যাওয়া ভাত বের করে ভাতভাজি করে ফেলুন। লম্বা ফালি কাঁচামরিচ আর হলুদ দিয়ে। ভাজার সময় ভাত থেকে অসাধারণ একটা বাসি বাসি গন্ধ বের হয়ে সকালটা করবে আনন্দঘন। তারপর ডিম ভাজি করবেন একটু কাঁচা কাঁচা করে। সাথে থাকবে টাটকা ফুলকপি ভাজি। এরকম ফ্লেভারপূর্ণ খাবার দুনিয়ায় কেউ যদি আর একটা দেখাতে পারেন, আমার নামে মুরগি পুইষেন।
FAQ [Frequently Asked Questions]
.
প্রশ্ন: ভাজার ওপর ভিত্তি করে ডিম ভাজি কয় প্রকার?
উত্তর: তিন প্রকার: কাঁচা কাঁচা, পারফেক্টলি ভাজা আর কিছুটা পোড়া।
প্রশ্ন: ডিম ভাজি দুপুরে কি দিয়ে খেলে ভালো?
উত্তর: দুপুরে ডিম ভাজি খাওয়ার উত্তম পন্থা হলো ঘন গরম মাসকালাই
ডাল দিয়ে। সাথে নতুন আলুর কড়কড়া ভাজি।
প্রশ্ন: বেস্ট ডিম ভাজি কোনটা?
উত্তর: যে জীবনেও ডিম ভাজেনি, সে প্রথম যে ডিমটা ভাজবে; সেটা। ডিমভাজি করতে হয় আনাড়ির মতো। অর্থাৎ ভাজি হয়ে গেলে যখন দেখবেন ডিমে সাদা সাদা গোল সাইজের স্পট থাকছে, সেইটা হলো আসল স্বাদের। হোটেলে দেখসেন কী করে? কনডেন্সড মিল্কের কৌটায় মরিচ, পেঁয়াজ লবন দিয়ে এক সেকেন্ড গুলিয়ে যে ডিমটা তাওয়ায় ছাড়ে ভাই রে ভাই..
প্রশ্ন: একজন মানুষ দিনে কয়টা ডিম খেতে পারবে?
উত্তর: যদি গরিব হন, একটা ডিম ভেজে দুইজন ভাগ করে খাবেন, ভালবাসা বাড়বে। আর বড়োলোক হলে একাই দুইটা খেতে পারেন।
প্রশ্ন: ভাই, ডিম পোচ ভালো না ভাজি?
উত্তর: যদি হাতে বানানো পাতলা সিদ্ধ আটার রুটি থাকে, তখন পোচ ভালো। আর যদি চারকোনা ডালডা দিয়ে ভাজা হাতে বানানো মচমচে পরোটা দিয়ে খেতে চান, তখন ভাজি করলে মজা পাবেন।
প্রশ্ন: কোন ডিম ভাজি ভালো, হাঁসের না মুরগির ?
উত্তর: দুটাই।
প্রশ্ন: আংকেল, ব্রয়লার মুরগির ডিম পারে?
উত্তর: সরি ভাইয়ের ছাওয়াল, ঐটা ‘ব্রয়লার’ না হয়ে ‘ফার্মের’ হবে।
প্রশ্ন: ভাই, লাল ডিম ভালো না সাদা ডিম ভালো?
উত্তর: মন পরিষ্কার থাকলে সাদাটা কিনবেন, আর মনে রং লাগলে লালটা।
প্রশ্ন: দুলাভাই, ডিম ভাজলে কিছুক্ষন পর চিমরা হয়ে যায় কেন?
উত্তর: সাথে সাথে না খেলে তো চিমরা হবেই?
প্রশ্ন: ডিম ভাজার প্রধান শত্রু কী?
উত্তর: বেশি লবন।
প্রশ্ন: ডিম আগে না মুরগি আগে?
উত্তর: খুঁদ আগে। খাবার না পেলে ডিম-মুরগি হতো?
অটোয়া, কানাডা