7.9 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

ভালোবাসার অনন্য নজির, স্ত্রীকে বাঁচাতে এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক!

ভালোবাসার অনন্য নজির, স্ত্রীকে বাঁচাতে এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক! - the Bengali Times
ছবি সংগৃহিত

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়েই তাণ্ডব চালাচ্ছে। প্রতিদিন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হাজার হাজার মানুষ প্রিয়জন ও স্বজনদের কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমাচ্ছেন। তবে এবার স্ত্রীকে বাঁচাতে অনন্য নজির গড়লেন এক চিকিৎসক। স্ত্রীকে বাঁচাতে এবার নিজের এমবিবিএস ডিগ্রিই বন্ধক রাখলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে রাজস্থানে।

জানা গেছে, করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে দিনের পর দিন হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে পড়েছিলেন স্ত্রী। হাসপাতালের বিলের বোঝা মেটাতে ব্যর্থ তিনি। ইতোমধ্যে স্ত্রীর চিকিৎসা ব্যয়ে নিজের জমানো সব অর্থ শেষ করেছেন তিনি। পরে কোনও উপায় না পেয়ে নিজের এমবিবিএস ডিগ্রিই বন্ধক রাখলেন ওই চিকিৎসক। যদিও ঘটনাটি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ের। তবে তা সামনে এসেছে সম্প্রতি।

- Advertisement -

রাজস্থানের বাসিন্দা ৩২ বছরের ওই চিকিৎসকের নাম সুরেশ চৌধুরী। স্ত্রী আনিতা ও পাঁচ বছরের ছেলে নিয়ে পালি জেলার খেরওয়া এলাকায় থাকেন তিনি। গত বছর ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আনিতা। তার করোনা ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট-সহ অন্যান্য উপসর্গ বাড়তে থাকায় আনিতাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান সুরেশ। কিন্তু রোগীর ভিড়ে শয্যা মেলেনি সেখানে। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে জোধপুর এইমসে ভর্তি করতে হয়। সুরেশ নিজেও পেশায় চিকিৎসক। ফলে স্ত্রীর দেখভালের জন্য একটানা ছুটি নেওয়া তার পক্ষেও সম্ভব ছিল না। নিকটাত্মীয়ের উপরে স্ত্রীর দেখাশোনার ভার দিয়ে সে সময় নিজে প্রতিদিন হাসপাতালের ডিউটি করেছেন সুরেশ।

এদিকে দিনে দিনে আনিতার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সুরেশ জানতে পারেন,আনিতার ফুসফুসের ৯৫ শতাংশ বিকল হয়ে গেছে। ততদিনে হাল ছেড়ে দিয়েছেন আনিতার চিকিৎসকরা। তবে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে ফেরাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন সুরেশ। উন্নত সেবা পেতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করেন তিনি। আনিতা তখন ভেন্টিলেটরে। ওজন কমে ৫০ থেকে ৩০ কেজি হয়ে গেছে তার। ফুসফুস আর হৃদযন্ত্র প্রায় বিকল। ইকমো যন্ত্রের সাহায্যে কোনও মতে টিকে রয়েছে প্রাণ। বেসরকারি হাসপাতালে ওই চিকিৎসা চালাতে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ রুপির কাছাকাছি বিল হয়েছিল। পাহাড়প্রমাণ সেই বিলের সামনে ১০ লাখ রুপির জমানো পুঁজি ফুরিয়েছে নিমেষেই। এরপর বাকি টাকা জোগাড় করতে নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রাখার সিদ্ধান্ত নেন তরুণ ওই চিকিৎসক। তার বিনিময়ে ৭০ লাখ রুপি পান সুরেশ।

এছাড়া জমি বিক্রি, বন্ধুদের থেকে ধার-দেনা করে জোগাড় হয় আরও কিছু। অবশেষে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে নেন সুরেশ। করোনাকে হারিয়ে ফিরে পেয়েছেন স্ত্রীকে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles