
হোয়াইট হাউজ ও ইউরোপিয়ান কমিশন আন্তর্জাতিক লেনদেনের প্ল্যাটফরম সুইফট সিস্টেম থেকে রাশিয়ার নির্ধারিত কিছু ব্যাংককে বহিস্কার করার কথা ঘোষণা করেছে। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং কানাডাও একই ঘোষণা দিয়েছে। এই যুদ্ধ যে পুতিনের জন্য কৌশলগতভাবে ব্যর্থ এর মধ্য দিয়ে সেটাই প্রমাণ করে দিতে চাইছে দেশগুলো।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, এ পদক্ষেপের ফলে এই ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং বৈশি^কভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যর্থ হবে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে যাতে করে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার আন্তর্জাতিক মুদ্রাকে কাজে লাগাতে সমর্থ হয় এবং অবরোধ অর্থহীন হয়ে পড়ে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লক্ষ্য করে অবরোধ আরোপ নিয়েও আলোচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা। এ ধরনের পদক্ষেপ রাশিয়ার আকৃতির কোনো অর্থনীতির ব্যাপারেই এর আগে নেওয়া হয়নি। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি এবং আলোচনায় থাকা অবরোধের কাঠামোও এখনও পরিস্কার নয়।
তবে পশ্চিমাদের এ উদ্যোগ পুতিনকে একঘরে ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টায় নজিরবিহীন অগ্রগতি এবং গত কয়েক দিনে ও ঘণ্টায় তাদেরকে দ্রুততার সঙ্গে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। রাশিয়াকে সুইফট সিস্টেম থেকে বাদ না দেওয়া ব্যক্তি পুতিনের ওপর অবরোধ না দেওয়ার কারণে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে চাপের মধ্যে পড়তে হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এর ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বছরের পর বছর ধরে রাশিয়ার অর্থনীতিকে অবরোধ থেকে রক্ষার যে চেষ্টা করছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লক্ষ্য করে অবরোধ সেই চেষ্টার একেবারে কেন্দ্রে আঘাত করা। বিশে^র চতুর্থ সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ গড়ে তুলেছে রাশিয়া, যার পরিমাণ ৬৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এরই মধ্যে রাশিয়ার আর্থিক খাতের ওপর বড় ধরনের অবরোধ আরোপ করেছে। রাশিয়ার সর্ববৃহত ঋণদানকারী সংস্থার ওপর অবরোধ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন ও মার্কিন আইনপ্রণেতাদের তরফ থেকে রাশিয়াকে সুইফট সিস্টেম থেকে বের করে দেওয়ার দাবি ওঠে। ইউক্রেনের এই দাবির প্রতি সবার আগে যেসব দেশ সমর্থন জানায় তাদের মধ্যে আছে যুক্তরাজ্য, লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া ও লাটভিয়া। এর আগে জার্মানি সুইফট থেকে রাশিয়াকে বাদ দিলে বড় ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতির আশঙ্কা করলেও পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্তের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে।