
এনারা বাংলাদেশে ইতিহাসের লিজেন্ড,যুগান্তকারী ব্যক্তিত্ব।সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ইতিহসের ও লিজেন্ড। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আমার হাত চেপে ধরে বিটপী এ্যাডভভার্টাইজিং কোম্পানীতে নিয়ে গিয়েছিলেন চাকরীর জন্যে। রামেন্দুদা দোটানায় ছিলেন,যেহেতু তিনি কয়েক বার দেখেছে বংলা কপি রাইটার কবি নির্মলেন্দু গুণে সাথে গঞ্জিকা পানে। আর্ট ডিরেক্টর শিল্পী আবদুল মুক্তাদীর ফেরেস্তার মত রুমে ঢুকে বল্লেন-নিয়ে নাও রামেন্দু,কাজে খুব চাপ। চাকরী হলো, প্রাণে বাঁচলাম। আজ স্মৃতিচারণে রামেন্দুদা বল্লেন-সায়ীদ ভাই বলে ছিলেন -চাকরী পেলে ছেলেটি আত্মহত্যা করবে!
আসলে এরকম নয় আবদুল মান্নান সৈয়দ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের কাছে নিয়ে যেতে ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘কন্ঠস্বরে’ পর পর গল্প ছাপা হতে লাগলো আমার। সায়ীদ ভাই পছন্দ করছিলেন গল্প। আমি তখন চট্টগাম বাড়ি থেকে বিতাড়িত,নিজের দায়িত্ব নিজে টানা দূরে থাক! দুই বেলা খাদ্যই যোগান দিতেই নিজকে পারছিলাম না। মেলনিউটেশানে গোটা মুখাবয়বে নীল শিরা জালের মত ফুটে উঠছিলো। সায়ীদ ভাইয়ের স্ত্রী ভাবী লক্ষ্য করে একদিন বল্লেন – সায়ীদ,গল্প ছাপতেই ব্যস্ত তুমি,ছেলেটা যে ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে তা খেয়াল করে দেখেছো!পরদিন সকালেই সায়ীদ ভাই তাই হাত চেপে ধরে বিটপীর দিকে ছুটে ছিলে।
আসলে আত্মহত্যা-টত্মা নয়,আমিতো এমনিতে মরে যাচ্ছিম,মৃত্যু নিয়ে তেমন একটা শোধবোধ ও ছিলোনা। বেঁচে থাকাটাই মনে হতো একটা সার্কাস্টিক ব্যাপার।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ,রামেন্দু মজুমদার,আবদুল মুক্তাদীর যদি এই কৃপা না করতেন আমি আজ দেশে বিদেশে বিশাল সব ছবি এঁকে প্রদর্শনীর পর প্রদর্শনী করতে পারতাম না,৩৯টি গল্প উপন্যাস কিশোর সাহিত্যের প্রকাশিত বইয়ের জঞ্জাল হতোনা। সব চেয়ে বড় কথা আমার একমাত্র মেয়ের দুই পুচকী কন্যার অপূর্ব মুখই দেখা হতোনা।
ধন্যবাদ শিল্পী ও চলচ্চিত্রকার অনুপম দাস,তার কৃপায় দু’বছর পর আবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ হলো রামেন্দুদা ও ফেরৌসী ভাবীর। রামেন্দুদা মুখ দেখলে আমার প্রশান্তি লাগে,শক্তি পাই যুদ্ধ করে আর এক কদম সামনে বাড়াতে।
স্কারবোরো, অন্টারিও, কানাডা