
প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকায় কেনা জমি ও বানানো বাড়ি নিজের নামে লিখে নিয়ে তালাক দিয়েছেন এক নারী। দেশে ফিরে কিছু না পাওয়া সেই প্রবাসী স্ত্রীসহ আটজনের নামে মামলা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
আসামিরা হলেন মাহফুজার রহমানের সাবেক স্ত্রী রজনী খাতুন (৩৩), তার বর্তমান স্বামী মো. রেজাউল করিম (৩২), তার বাবা আব্দুল খালেক (৫৫)। এ ছাড়া আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোছা চাঁন মুনী (৪৫), বিউটি বেগম (৩৮) এবং মোছা. শান্তি বেগম (৩৫) নামের চারজনকে আসামির করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মাহফুজার রহমান চার বছর প্রেম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন রজনী খাতুনকে। চার বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালের আগস্টে মালয়েশিয়া যান মাহফুজার। এর ছয় মাস পর রজনী খাতুন গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর এলাকায় বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এ সময় স্বামী মাহফুজারের পাঠানো টাকায় জামালপুরে রজনী নিজের নামে জমি কেনেন। নিজ নামে জমি কিনে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়তলা বাড়ির ভিত দেন। একতলা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেন। বাড়ি নির্মাণে আরও টাকা দরকার জানিয়ে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া মাহফুজারের সাত বিঘা জমি প্রায় ৭ লাখ টাকায় ইজারা দেন। এভাবে সাড়ে ১৩ বছরের প্রবাস জীবনে রজনীকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা দেন মাহফুজার। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল বাশারের (৪৫) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যান রজনী।
গত ২০ জানুয়ারি দেশে ফিরে নিজের টাকায় নির্মিত বাড়িতে উঠতে গিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী রজনী তাকে তালাক দিয়েছেন। এই বাড়িতে থাকার কোনো অধিকার তার নেই। গত ২৫ মার্চ রজনী মামাতো ভাই রেজাউল করিমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে বসবাস করছেন।
মাহফুজার রহমান বলেন, ‘সাড়ে ১৩ বছর মালয়েশিয়া থাকা অবস্থায় কোনো টাকাই নিজের জন্য রাখি নাই। নিজের শরীরের ওপর সর্বোচ্চ কষ্ট দিয়ে যা ইনকাম করেছি, তার সবই স্ত্রী রজনীর হাতে পাঠিয়েছি। এখন আমার আর কিছুই নাই। লজ্জায় রাস্তায় চলতে পারি না। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’
এ ঘটনায় রজনী খাতুন বলেন, ‘আমি আবার বিয়ে করেছি। আবুল বাশারের সঙ্গে আমার কোনো অনৈতিক সম্পর্ক ছিল না।’ তবে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা মাহফুজারকে কবে ফেরত দেবেন, তা জানাননি তিনি।