
পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ। আজ সোমবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে শাহবাজ শরিফের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৭৪টি, যদিও তার দরকার ছিল ১৭২টি।
শাহবাজ পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি। ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান ৭০ বছর বয়সী শাহবাজের জন্ম লাহোরে। পাকিস্তানেই তার পড়াশোনা। পড়াশোনা শেষে পারিবারিক ব্যবসা একটি ইস্পাত কারখানায় মনোযোগ দেন তিনি। শাহবাজ শরিফের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে বেশ সুনাম রয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বেশ পরিচিতি লাভ করেন।
১৯৯৭ সালে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মধ্য দিয়ে শাহবাজ শরিফের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে কারারুদ্ধ হন তিনি। পরের বছরেই সৌদি আরবে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাকে।
দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকার পর শাহবাজ শরিফ ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফিরে আবার রাজনীতি শুরু করেন। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ২০১৩ সালে তৃতীয় মেয়াদে শাহবাজ প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
বড় ভাই নওয়াজ শরিফ দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে পাকিস্তান ত্যাগের পর জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখেন শাহবাজ শরিফ। এরপর তিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) সভাপতির দায়িত্ব পান। শাহবাজের বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতি মামলা হয়েছে। তবে সেসব মামলায় শাহবাজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়নি।
অপরদিকে বিশ্লেষকদের ভাষ্য, শাহবাজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর এ দেশটিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নীতিতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনবার দেশটিতে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী।
শনিবার মধ্যরাতে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে ইমরান খানের জোট সরকারের পতন হয়। ইমরান সরকারের পতনের মাধ্যমে দেশটির ইতিহাসে নির্বাচিত কোন সরকারই মেয়াদ পূর্ণ না করার ঘটনা আরও একবার দেখল বিশ্ব।