4.3 C
Toronto
মঙ্গলবার, মার্চ ১৮, ২০২৫

গাছের সঙ্গে বাঁধা শিশু কাওছারের জীবন!

গাছের সঙ্গে বাঁধা শিশু কাওছারের জীবন!

সাত বছরের শিশু কাওছার। মায়াবী চেহারা, আর ফুটফুটে হাসি মুখে লেগে থাকলেও তিন বছর ধরে গাছের সঙ্গে বাঁধা পড়েছে তার জীবন! কাওছার যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষণই তার মা দঁড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে পা দুটি বেঁধে রাখেন। বাঁধ খুলে রাখলে সে অন্য কোথাও চলে যায়, কিংবা ঘরের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। এমনকি তাকে জামা-প্যান্ট পরালে সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দেয়।

- Advertisement -

কাওছার ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুলসুমবাগ গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. আব্দুল আজিজ ও স্ত্রী খাদিজা দম্পতির তৃতীয় ছেলে। এই দম্পতি জানান, তাদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কাওছার তৃতীয়। আব্দুল আজিজ কৃষিকাজ করে সংসার চালান। সংসারে অভাব থাকলেও শান্তিতে ছিলেন তারা। কিন্তু ৭ বছর আগে জন্মগ্রহণ করে কাওছার। সুন্দর চেহারা, সঙ্গে ফুটফুটে হাসি মুখে লেগে থাকত শিশুটির। তিন বছর বয়সেই কথা বলত সে। তখন শিশুটি উঠানে খেলতে গেলে মধু পোকা কামড় দেয় তার মাথায়। পরে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করান। কিন্তু ভালো কিছু হয়নি।

শিশুটির চিকিৎসায় তারা প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ করেন। অনেক কষ্টে বিভিন্ন মানুষ ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ছেলের চিকিৎসা খরচ জোগান তারা। কিন্তু তার পরও শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠেনি। তারা আরো জানান, ছেলে কথা বলে না। ঘরে ছেড়ে দিলে মালামাল সব ভেঙে ফেলে, বের হয়ে অনেক দূরে চলে যায়। জামা পরালে ছিঁড়ে ফেলে।

মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘গত তিন বছর ধইরা ছেলেডারে দড়ি দিয়ে বাইন্ধা রাখি। যত সময় সজাগ থাকে তত সময়ই দড়ি দিয়া বাইন্ধা রাখি। এত ছোট পোলাডারে বাইন্ধা রাখতে অনেক কষ্ট হয়। তার পরও কী করমু। টাকার লইগা চিকিৎসা করাতে পারি না। ছেলেডার প্রতি মাসে ছয় হাজার টাকার ওষুধ লাগে। কিন্তু টাকার অভাবে দুই মাস ওষুধ খাওয়াইতে পারি নাই। চট্টগ্রামের এক ডাক্তার কইছে, কাওছারের ভালো চিকিৎসা করালে আবারও সুস্থ হইবো। এতে দুই লাখ টাকার খরচ হইবো। এত টাকা কই পামু। কেউ যদি আমাগো গরিবরে সাহায্য করে তাইলে ছেলেডারে চিকিৎসা করাইয়া সুস্থ করে তুলতে পারতাম। ’ এ জন্য তিনি সমাজের সব মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান জানান, বিষয়টি কেউই তাদেরকে অবগত করেননি। এমনকি ছেলেটির বাবা-মাও কখন তার কাছে যাননি।

খোঁজ নিয়ে শিশুটির চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র : নতুন সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles