
এক শয়নকক্ষের অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বড় বাড়িতে উঠতে চাইছেন শাজেলা সান্তানা। কিন্তু সামর্থ্যের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্টারিওর লন্ডনের এই বাসিন্দা বলেন, তার সাত বছরের ছেলে দ্রুত বড় হচ্ছে এবং তার আরও কক্ষের প্রয়োজন। কিন্তু নগরীতের বাড়ির উচ্চ মূল্য বড় বাড়িতে যাওয়া সত্যিই কঠিন করে তুলেছে। পরিস্থিতি খুবই পরিহাসের। সত্যিই আমার দুই শয়নক্ষ দরকার। কয়েক বছর আগে স্বাভাবিক সময় হলে হয়তো আমি তিন শয়নকক্ষের বাড়ি খুঁজতাম। তাহলে বাড়তি একটি কক্ষ স্টুডিও হিসেবে ব্যবহার করতাম।
সান্তানা এই বাড়িতে এসেছেন ছয় বছর আগে এবং বাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৮০০ ডলার পরিশোধ করছেন। উত্তর লন্ডনের এই ভবনে সংস্কার করা এক শয়নকক্ষের অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া প্রায় ২ হাজার ডলার। এছাড়া বাড়ির যে দাম তাতে করে বাড়ি কেনার পরিকল্পনাটাও বাদ দিতে হয়েছে তাকে।
দক্ষিণপশ্চিম অন্টারিওর বাসিন্দাদের যেসব ইস্যু মোকাবেলা করতে হচ্ছে আবাসনের উচ্চ মূল্য তার মধ্যে অন্যতম। অন্টারিওর ব্যারিতে একটি ভাড়া বাসায় সঙ্গীকে নিয়ে বসবাসকারী ৫৩ বছর বয়সী এক নারী বলেন, লন্ডন হসপিটালের কাস্টোডিয়ানস’ সুপারভাইজরের নতুন চাকরিটা আমি খোয়াতে চাই না এবং কোনো মোটেল অথবা ২৬ বছর বয়সী মেয়ের কাছে চলে যাবো বলে ভাবছি। আমার জন্য ভালো বেতনের একটি চাকরি অপেক্ষা করছে এবং আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। একটা জায়গার ভাড়া মাসে ১ হাজার ৯৫ ডলার। আমি সেটা দেখতে গিয়েছিলাম এবং এক ব্যক্তি ঠিকানা দেওয়ার জন্য ফোন করার সময় জানালেন যে মাসিক ভাড়া ১ হাজার ৫০০ ডলার।
অর্থ জমিয়ে কোনোদিন ভ্রাম্যমাণ একটি বাড়ি কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন ওই নারী। কারণ, অবসরের আগে বাড়ি কেনাকে সঠিক কাজ মনে হচ্ছে না তার কাছে। তিনি বলেন, আমার মনে হয় না কোনোদিন সত্যিকারের বাড়ির মালিক হবো। যেটা হবে তা হলো ভ্রাম্যমাণ বাড়ি, যেটা ২ লাখ ডলারের কমে যাওয়া যাবে।
ওয়েস্টান ইউনিভার্সিটির সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইকেল হান বলেন, লন্ডনে বাড়ির দাম অন্যান্য এলাকার তুলনায় কম ছিল। কারণ এই অঞ্চলের অর্থনীতি উৎপাদন খাতের উপর নির্ভরশীল এবং এখন পর্যন্ত তা ভালো অবস্থায় আসেনি। টরন্টো ও মন্ট্রিয়ল থেকে অর্থ নিয়ে লোকজন লন্ডনে আসছেন এবং নবাগতদের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে লন্ডনে জনসংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। যেখানে বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এটাই সংকটের প্রধান কারণ।