
বিতর্ক যেন থামছেই না পরিচালক সাজিদ খানকে ঘিরে। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস ১৬’তে অংশ নেওয়ার পর থেকে আবারো বিতর্ক শুরু হয়েছে সাজিদকে ঘিরে। যৌন হেনস্তার অভিযোগে বিদ্ধ হচ্ছেন এই পরিচালক। এবার তার বিরুদ্ধে আরো এক বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে এলো।
প্রয়াত অভিনেত্রী জিয়া খানকেও যৌন হেনস্তা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠল সাজিদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ করেন জিয়ার বোন কারিশমা খান। সিনেমার মহড়ায় জিয়াকে পোশাক ও অন্তর্বাস খুলতে বলেছিলেন সাজিদ। এমনই দাবি করেন জিয়ার বোন। এই প্রসঙ্গে কারিশমা বলেন, ‘মহড়া চলছিল। ও (জিয়া) চিত্রনাট্য পড়ছিল। সে সময় উনি (সাজিদ) দিদিকে অন্তর্বাস খুলতে বলেন। কী করবে ভেবে পাচ্ছিল না ও। পরে বলেছিল, ছবির শুটিংই শুরু হলো না, তার আগে এত কিছু করতে হচ্ছে।’
শুধু জিয়াই নন, তাকেও হেনস্থা করেন বলে সাজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কারিশমা। তিনি বলেন, ‘একবার দিদির সঙ্গে সাজিদ খানের বাড়িতে গিয়েছিলাম। রান্নাঘরের টেবিলে গা এলিয়ে বসেছিলাম। তখন আমার বয়স ১৬। আমার বসার ভঙ্গি আর পোশাক দেখে বলা হয় যে, আমি নাকি যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাই। এ কথা শোনা মাত্রই আমার দিদি জিয়া প্রতিবাদ করে। তার পরই আমরা ওর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই।’ বিবিসির ডকুমেন্টারি ‘ডেথ ইন বলিউড’-এ এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জিয়ার বোন কারিশমা।
সাজিদের সঙ্গে এই তিক্ত অভিজ্ঞতার পরও তার ছবিতে খানিকটা বাধ্য হয়েই কাজ করেন জিয়া। কারণ ততদিনে চুক্তিপত্রে সই করেছেন তিনি। কারিশমার আরো অভিযোগ, ছবিতে অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রীদের থেকে নগ্ন ছবি চাইতেন সাজিদ। এমনকি, নারীদের সামনেই পর্নোগ্রাফি দেখতেন সাজিদ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ‘মিটু আন্দোলন’-এ শামিল হয়ে সাজিদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়ে সরব হন একাধিক নারী। ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ দিয়ে তাদের যৌন নির্যাতন করা হতো বলে সাজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পরই সাজিদকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছিল ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’। সেই বিতর্কের পর সম্প্রতি বিগ বসের প্রতিযোগী হিসাবে ফিরেছেন সাজিদ। কিন্তু আবার তাকে নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হল। বস্তুত, সাজিদ খানকে বিগ বসে দেখে খেপে উঠেছেন অনেকেই।
এত অভিনেত্রীকে যৌন হেনস্তা করার পরও কেন তিনি জনপ্রিয়তা পাবেন, এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রাক্তন বিগ বস প্রতিযোগী উরফি জাভেদও। শুধু তা-ই নয়, উরফি জানান, সাজিদকে সমর্থন করছেন যে অভিনেত্রীরা, তাদেরকেও ঘৃণার চোখে দেখবেন। উরফি বলেন, ‘যৌনশিকারিদের সমর্থন দেওয়ার মঞ্চ বানিয়ে ফেলেছেন এটাকে? যে এতজন অভিনেত্রীর জীবনে ত্রাস হয়ে এসেছে, সে এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে কিভাবে? হাততালি পাচ্ছে কিভাবে? শুধুমাত্র শো-তে টিআরপি বাড়াতে চাইছেন বলেই?’