
ছয় সপ্তাহের বিরতি শেষে আইনসভার অধিবেশন যখন শুরু হয়েছে তখন একাধিক সংকট ঘিরে ধরেছে অন্টারিওকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে উপচেপড়া ভিড়, অ্যাম্বুলেন্সের ঘাটতি, মুদিপণ্যের আকাশচুম্বি দাম, বিরামহীন মূল্যস্ফীতি, আবাস সংকট ও সম্ভাব্য শিক্ষা ধর্মঘট নিয়ে ভাবতে হচ্ছে আইনপ্রণেতাদের। শীত আসন্ন হওয়ায় কোভিড-১৯ ও ফ্লুর ঝুঁকিও বাড়ছে।
প্রদেশ বলছে, আবাসন হচ্ছে তাদের মনোযোগের প্রধান বিষয়। প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ডের মুখপাত্র ক্রিস্টিন উড বলেছেন, আমরা জানি যে, অন্টারিওর
বাড়ির সরবরাহের ঘাটতির অর্থ হলো বহু তরুণের পক্ষে বাড়ি খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রদেশের পক্ষ থেকে আবাসন আইন উত্থাপন করা হয়েছে। সেখানেও আগামী ১০ বছরে ১৫ লাখ বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় গত মে মাসে প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। উড বলেন, অন্টারিওবাসীকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো পূরণ অব্যাহত রাখবে প্রদেশ। এর মধ্যে আছে পরিবারগুলোর ব্যয় কমানো, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শুরু করা এবং কোনো ধরনের বিঘœ ছাড়াই শিশুদের শ্রেণিকক্ষে ধরে রেখে তাদেরকে ভবিষ্যতে চাকরির উপযোগী করে গড়ে তোলা। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও মন্দার হুমকিও প্রদেশের সর্বোচ্চ বিবেচনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্টারিওবাসী যাতে শক্তিশালী অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে সেটা নিশ্চিতে কাজ করছে আমাদের সরকার। সম্ভাব্য বৈশি^ক অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ আসলে আমরা তা থেকে দূরে থাকতে পারবো।
বিরোধীদের অগ্রাধিকারের প্রথমেই আছে স্বাস্থ্যসেবা। এনডিপির অন্তর্বর্তী নেতা পিটার ট্যাবান্স বলেন, শিশুদের ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটের ধারণক্ষমতা কমেছে, জরুরি বিভাগগুলো কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত বন্ধ থাকছে। সামনে ফ্লুর মৌসুম হওয়ায় অন্টারিওর হাসপাতালগুলোর সংকট কতটা খারাপ হবে তা ভেবে আমি উদ্বিগ্ন। কিন্তু সরকার আগুনে ঘি ঢালছে এবং পদক্ষেপ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
অন্টারিওর চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. কিয়েরান মুর সম্প্রতি বলেন, সামনে শীতটা কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে। কোভিড-১৯ও ফিরে আসতে পারে। শ্বাসকষ্ট ও ফ্লু ফিরে আসতে পারে। কোভিড-১৯ এর কারণে গত দুই বছর এগুলো দূরে ছিল।
প্রদেশে বসবাসকারী হাজারো আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষিত নার্সকে দ্রুত কাজে সম্পৃক্ত করতে কলেজ অব নার্সেস অব অন্টারিওর সঙ্গে কাজ করছে প্রোগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ সরকার। গত মাসে তারা একটি আইনও পাস করেছে, যার ফলে লং-টার্ম কেয়ার হোমের অপেক্ষায় থাকা চিকিৎসাধীন রোগীদের তাদের পছন্দের বাইরে কেয়ার হোমে পাঠাতে পারবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অন্টারিও গ্রিন পার্টির নেতা মাইক শ্রেইনার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন খাদ্য ও বাড়ির মূল্যকে। খাদ্যের দাম গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এটাই এখন মূল্যস্ফীতিকে সবচেয়ে বেশি উস্কে দিচ্ছে।