
লং কোভিড মোকাবিলায় সরকারের সামনে একটি পথরেখা হাজির করেছেন কানাডার চিফ সায়েন্স অ্যাডভাইজর মোনা নেমার। কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতি অথবা লং কোভিড মোকাবিলায় গত জুলাই মাসে গঠিত টাস্কফোর্সের কাছ থেকে আসা সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, আগষ্ট মাসে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্ক ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ কানাডিয়ানের মধ্যে আক্রান্তের তিন মাস বা তার বেশি সময় পরও উপসর্গ রয়েছে। এসব উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাংশপেশিতে ব্যথা, শ^াসকষ্ট, চরম অবসাদ, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা। প্রথমেই আমাদের মেনে নিতে হবে যে, এগুলো বাস্তব। অর্থাৎ, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ মারাত্মক। সেই সঙ্গে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি।
লং কোভিডের সংজ্ঞা কী এবং কীভাবে এটা সনাক্ত হবে, চিকিৎসাই বা কী হবে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মতৈক্য তৈরি হয়নি।
নেমার বলেন, কী ঘটছে তা জানতে আমাদের আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন। এছাড়া বিদ্যমান চিকিৎসা এতে কার্যকর কিনা সে চেষ্টাও আমাদের করা উচিত।
যে ১৮ দফা সুপাইরশ করা হয়েছে তার মধ্যে আছে এটি সনাক্ত করা ও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া, পরিস্থিতি সম্পর্কে গবেষণা করা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। নেমার বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন যে লং কোভিডের উপসর্গ কমাতে সক্ষম সেটা মোটামুটি পরিস্কার।
কোভিড-১৯ এর প্রভাব কেন দীর্ঘমেয়াদী সে ব্যাপারে ধারণা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে কানাডিয়ান ইনস্টিটিউটস ফর হেলথ রিসার্চের প্রেসিডেন্ট ড. মাইকেল স্ট্রং বলেন, এখানে তিনটি বিষয় কাজ করছে। প্রথমটি হচ্ছে প্রাথমিক সংক্রমণের পর হৃদপিন্ড, ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি, যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব। প্রাথমিক সংক্রমণের পর যে ইমিউন রেসপন্স তা ভাইরাস চলে যাওয়ার পরও অব্যাহত থাকা। তৃতীয়টি হলো ভাইরাস নিজেই দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ¯œায়ু জটিলতায় আক্রান্তদের মধ্যে।
টাস্কফোর্স যেসব সুপারিশ করেছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে লং কোভিডের প্রভাব এবং কীভাবে তা কাজ করে তা জানতে গবেষণা কৌশলের দাবি জানানো হয়েছে। নেমার বলেন, কেন নারীরা পুরুষের তুলনায় দ্বিগুন হারে লং কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, আমরা তা জানি না। অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে কেন এটা দ্রুত কাজ করে তাও আমাদের এখনো অজানা। তবে এটা জানি যে, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি মারাত্মক এবং একটা সময় তার পরিণতি অবশ্যম্ভাবী।