
ড্রাইভার সাইডের পিছনের চাকা ফ্লাট। হাওয়া দিতে হবে। নইলে গাড়ি চালানো যাবেনা। আজকে সকালেও গাড়ি ড্রাইভ করলাম কিন্তু আমার একদম চোখে পরেনি। গাড়ি ড্রাইভ করার সময়ও টের পাইনি। আমি আসলে অনেক বিপদই আগে থেকে টের পাইনা। মারাত্বক সমস্যা না হওয়া পর্যন্ত। এটা আমার বড় ধরনের দুর্বলতা।
আমাদের বড় কন্যা কিছুক্ষন আগে বিষয়টি আমার নজরে আনল। তখন রাত আটটা বাজে। পরদিন সকালে গাড়ি চালাতে না পারলে অফিসে যাবো কীভাবে? আমার অফিসে বাসে বা ট্রেনে যাওয়ার কোন বাও নেই।
মহা সমস্যা।
টায়ারের লিক সারানোর দোকানও বন্ধ।
বড় কন্যা আমার গাড়িটি নিয়ে আইস কফি কিনতে টিম হর্টনে গিয়েছিল। পার্শ্বের শপার্স ড্রাগমার্ট থেকে এক ডজন ডিম কিনে আনতেও বলেছিলাস তাকে। কারন ডিম শেষ হয়ে গেছে। সকালে নাস্তা খাওয়ার ডিম নেই।
ডিম কেনার পর ডিমের প্যাকেট নিয়ে যখন গাড়িতে উঠতে যাবে তখন পার্শ্বে পার্ক করা একজন লোক তাকে জানালা দিয়ে ডেকে বলেছে যে, তার গাড়ির টায়ার ফ্লাট।
কন্যা চেক করে দেখে সত্যি ড্রাইভার সাইডের পিছনের চাকায় হাওয়া ৭০% নেই।
বিষয়টা সে আমাকে ফোন করে জানাল।
বললাম, ড্রাইভ করে বাসায় আসো তারপর দেখছি। বাসায় আসার পর দেখলাম আসলেই একেবারে হাওয়া নেই।
এবার ছোট কন্যাকে সাথে নিয়ে গেলাম গ্যাস স্টেশনে চাকায় হাওয়া দিতে। ছোট কন্যাকে সাথে নিলোম এজন্য যে, সে যেন হাওয়ার মিটারটা দেখতে পারে। কারন আমি হাওয়া দেয়ার সময় নিজে মিটার রিড করতে পারিনা। ৩২ এর বেশী বা কম হলে আবার গাড়ি চালানো সমস্যা হয়। ছোট কন্যা চাকাায় হাওয়া দিতে হেল্প করল।
চাকায় ঠিকঠাক মত হাওয়া দিয়ে বাসায় ফিরলাম। যাক নিশ্চিত হওয়া গেল।
চারপাচ মিনিট লাগল বাসায় আসতে। গাড়ি থেকে নেমে চিন্তা করলাম আবার একটু চেক করে দেখি তো হাওয়া ঠিক আছে কীনা?
ওমা একি!
হাওয়া শেষ!
মানে লিক হয়ে গেছে। চাকায় হাওয়া থাকছে না।
এখন কী করা?
কালকে অফিসে যাবো কী করে?
মাথা নষ্ট।
হঠাৎ ছোট কন্যা বলে উঠল, নো ওরিজ। তোমার স্পেয়ার চাকা আছে না। ওটা লাগিয়ে কালকে কোন মতে অফিসে যাও। পরেরটা পরে দেখা যাবে।
কন্যার কথা টেনশন ১০০ থেকে কমে বিশে আসল।
তাই তো আমি একদম ভুলেই গিয়েছিলাম।
তারপর আর কী করা!
এই মাইনাস তিনের ঠান্ডার মধ্যে ফ্লাট টায়ার খোলা, আবার অতিরিক্ত চাকা বের করে তা লাগানো কত কষ্টের কাজ বোঝেন?
কন্যারা হেল্প করল বলে রক্ষা।
কষ্ট হলেও কালকে নিশ্চিত মনে অফিসে তো যাওয়া যাবে।
মনে হয় বয়স যত বাড়ে মানুষের স্মৃতিশক্তি তত কমতে থাকে।
মানে ডিমেনশিয়া!
হতেই পারে।
যাদের নাকের ভেতর চুল নেই, তাদের নাকি ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুকি বেশী। মানে মনে না থাকার রোগ বাড়ে। কারন হিসেবে বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন, নাকের লোম ভাইরাস প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। নাকের ভিতর লোম না থাকলে এক ধরনের ভাইরাস নাক দিয়ে সরাসরি ব্রেনে গিয়ে বাসা বাঁধে। তারপর সেই ভাইরাস ডিমেনশিয়া রোগে মানুষকে আক্রান্ত করে ফেলে। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনো বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। তবে ধারনা করছেন। পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
আমার নাকের ভিতর আবার লোম কম। এজন্য একটু ভয়ে আছি।
বয়স বাড়লে যেরকম স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে সে রকম পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্ভরতাও বাড়ে। সন্তানদের ওপর তো অবশ্যই। পুরুষ হোক বা নারী হোক তাদের হেল্প ছাড়া জীবন পরিচালনা কষ্টকর হয়ে ওঠে।
স্কারবোরো, কানাডা