
আমাদের এলাকায় আজ বেশ তুষার পরছে। গত রাত থেকেই। ঠান্ডাও বেশ। সকালে ছোট কন্যাকে গাড়িতে করে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে এসেছি। যদিও সে প্রতিদিন হেটেই যায় স্কুলে। আর বলেছি, হেঁটে বাসায় ফিরবা। সে বলল, ঠিক আছে।
আজ বড় কন্যার ইউনিভার্সিটির ক্লাশ নেই। সে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ঘুমিয়েছে। কন্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে- সেটা ভাবতে ও বলতে ভালোই লাগে। আবার খারাপও লাগে এই ভেবে যে, নিজে বুড়ো হয়ে যাচ্ছি।
যাক, বেলা তিনটার দিকে বড় কন্যা আমার কাছে এসে বলল, “যাও, তোমার ছোট কন্যাকে স্কুল থেকে পিকআপ করে নিয়ে এসো।”
-কেন? সে তো হেটেঁ আসবে। সেরকই তো কথা ছিল। তাকে পিকআপ করে আনতে হবে– তুমি কীভাবে জানলা? তোমাকে সে ফোন করেছে?
-না, টেকস্ট করেছে।
-কীভাবে টেকস্ট করেছে? তার তো ফোন নেই।
-স্নাপ চ্যাটে।
– ওকে বুঝেছি। কিন্তুু আমি যেতে পারবোনা। পারলে তুমি যাও।
– তোমরা কী ধরনের প্যারেন্টস? তোমরা বাসায় থাকতে আমাকে যেতে হবে কেন?
-তোমারও তো এখন থেকে প্যারেন্টিং শেখা উচিৎ। যাও মাগো, একটু ছোট বোনকে নিয়ে আসো। সে তোমাকে লাইক করে, সে জানে তুমি বাসায় আছো। সেজন্যই হয়ত তোমাকে টেক্সট করেছে। দেখো না সে তো আমাকে ফোন করেনি।
তারপর আর কোন কথা হলনা।
কিছুক্ষন পর দেখলাম, সে ড্রয়ার থেকে গাড়ির চাবিটা নিয়ে বেড়িয়ে গেল।
আধা ঘন্টা পর ছোট বোনকে নিয়ে ফিরে এল।
সেটা দেখে অবচেতনভাবে একটা ভাললাগা কাজ করল মনে। বুঝলাম, সন্তান দায়িত্ববান হচ্ছে।
মনে হল কিছুক্ষনের জন্য হলেও জীবনের “দায়িত্ব ও ভালোবাসার” নাটকের খন্ড একটি এপিসোড দেখলাম।
টরন্টো, কানাডা