
এডমন্টন, আলবার্টাতে, একটি LGBTQ ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করার জন্য একজন মুসলিম ছাত্রকে একজন শিক্ষক তিরস্কার করে বলেছে, “ইউ ডোন্ট বিলং হিয়ার” এবং “আমরা বিশ্বাস করি যে লোকেরা যাকে ইচ্ছা বিয়ে করতে পারে।” অর্থাৎ পুরুষ মহিলা নয় যে কেউ যে কাউকে বিয়ে করতে পারে। শিক্ষক ভদ্র মহিলা আরো বুঝাতে চেষ্টা করেন যে তুমি যদি তোমার ধর্মের প্রতি সম্মান চাও তাহলে অন্যদের বিষয়কেও তোমাকে সম্মান করতে হবে।
স্কুলের প্রিন্সিপাল অবশ্য বলেছেন যে, ঘটনাটি তার স্কুলে ঘটেছে ঠিকই তবে “ঐ শিক্ষকের মতামত কানাডার মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে না। গ্রহণযোগ্যতা, অন্তর্ভুক্তি এবং অন্তর্গততার (acceptance, inclusion and belonging) মুল্যবোধের সাথে তার বক্তব্যের মিল নেই।
আমার মতে ঐ শিক্ষক আসলে এই দেশের মুল্যবোধ সম্পর্কে মনগড়া ধারনা পোষণ করেন, বিশেষ করে গনতন্ত্র ও অধিকারের স্বাধীনতা সম্পর্কে তার কোন ধারনা নেই। বরং তিনি উগ্র এবং বিদ্বেষী মনোভাব সম্পন্ন একজন মানুষ, ফলে ক্লাসে শিক্ষকতার মত মহান পেশায় তার থাকা উচিত নয়।
সহনশীলতা ও পরমত সহিষ্ণুতা গনতন্ত্রের অন্যতম দুটো অঙ্গ। অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, অপরের মতের বা ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া মানে এই নয় যে আমাকে অন্য ধর্ম বা মতকে পালন করতে হবে।
ধরুন কেউ একজন পৌত্তলিকতায় বিশ্বাস করে, আবার অপর একজনের ধর্মে পৌত্তলিকতা সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। দুটো সম্প্রদায়ই এই সমাজে এক্সিষ্ট করে। সভ্য গনতান্ত্রিক সমাজের মুল্যবোধ হলো এক সম্প্রদায় অপরের এইসব বিশ্বাসে বিশ্বাসী না হয়েও, একে অপরের বিশ্বাসকে প্রতিপালন না করেও উভয়ে উভয়ের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারে। প্রত্যেকেই শান্তিপূর্ণভাবে যার যার বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্ম পালন করতে পারে।
একজনের ধর্ম বিশ্বাস অপরজনের ধর্ম বিশ্বাসের সম্পুর্ন বিপরীত মেরুতে থাকলেও গনতান্ত্রিক মুল্যবোধের কারণে উভয়ে উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্হান বজায় রাখবে। কেউ কারো বিশ্বাসকে অপরের উপর জোর জবরদস্তিমূলক চাপিয়ে দিবে না।
এলজিবিটিকিউ বিষয়টাও তাই। এখানেও জোর জবরদস্তির কিছু নেই। কেউ তাদের অনুষ্ঠানে যেতেও পারে আবার নাও যেতে পারে। না গেলেই যে তাদের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল হয়ে গেল এরকম ভাবাটা বরং উগ্রপন্হাকে আমন্ত্রণ করে যা সহনশীল সমাজ গঠনের পরিপন্হি। আর সহনশীল সমাজ না গঠন করতে পারলে সমাজে সারাক্ষণই কলহ বিবাদ লেগে থাকবে যা কারো কাম্য নয়।
স্কারবোরো, কানাডা