অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে শতকোটি বছরের পুরনো পাথরে পাওয়া জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে প্রাচীন প্রাণীদের হারিয়ে যাওয়া একটি জগৎ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, প্রায় ১৬০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর জলরাশিতে এই জীবজগতের অস্তিত্ব ছিল। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিবর্তনের
কালপরিক্রমা সম্পর্কে আগের ধারণায় পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১০ বছর ধরে গবেষণা চালানোর পর প্রোটোসটেরল বায়োটা নামের জীবের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার নেচার সাময়িকীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রোটোসটেরল বায়োটা নামের অত্যন্ত ক্ষুদ্র এ জীবটি ইউক্যারিওটস প্রাণীর পরিবারভুক্ত। ইউক্যারিওটসের কোষ কাঠামো জটিল। এর মধ্যে আছে মিটোচন্ড্রিয়া। এটি কোষের পাওয়ার হাউস হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়াও আছে একটি নিউক্লিয়াস। এর নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য কেন্দ্রের মতো কাজ করে।
এতদিন ধারণা করা হতো মানবজাতি আদিম বংশানুক্রম ইউক্যারিওটিক কমন অ্যানচেস্টরের (এলইসিএ) সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রায় ১২০ কোটি বছর আগে এর অস্তিত্ব ছিল। তবে নতুন গবেষণা অনুযায়ী, এ বংশানুক্রম আরও বেশি পুরনো।
গবেষণার জন্য তারা অস্ট্রেলিয়ার নর্দার্ন টেরিটরির কাছে সমুদ্রের তলদেশে একটি পাথরের ভেতর পাওয়া আণবিক জীবাশ্ম নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষক জোচেন ব্রোকস এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের বিশ্বাস এটি পৃথিবীর প্রথম শিকারি প্রাণী। এরা ব্যাকটেরিয়া শিকার করে খেত। প্রোটোসটেরল বায়োটা ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে বড় ছিল। তবে এটি দেখতে কেমন ছিল তা জানা যায়নি।
গবেষক জোচেন ব্রোকস বলেন, নতুন আবিষ্কৃত প্রাচীন প্রাণিজগৎটির অস্তিত্ব প্রায় ১৬০ কোটি বছর আগে শুরু হয়েছিল। প্রায় ৮০ কোটি বছর আগেও এর অস্তিত্ব ছিল। এর পরবর্তী সময়ে পৃথিবীর বিবর্তনের সময়রেখাটি টোনিয়ান ট্রান্সফরমেশন নামে পরিচিত। তখন ছত্রাক ও শেওলার মতো নতুন জীবের উত্থান ঘটে। তবে ঠিক কবে প্রোটোসটেরল বায়োটার বিলুপ্তি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।