
অভিযুক্ত জয়দীপ দাস
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছেলেদের আবাসিক হলে মধ্যরাতে বান্ধবীসহ অবস্থান করার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম জয়দীপ দাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৮ ব্যাচের (২০১৮—১৯ সেশন) ছাত্র। তিনি শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
গত ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ২১ নম্বর হলে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি জানাজানি হয়। সেদিন মধ্যরাতে বান্ধবীসহ প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থান করেন জয়দীপ।
জয়দীপের হলের বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, জয়দ্বীপ দাস প্রথম বর্ষে শহীদ রফিক—জব্বার হলে থাকতেন। পরবতীর্তে দশতলা বিশিষ্ট নতুন হল নির্মিত হলে তিনি সেখানে চলে আসেন। তবে আবাসিক হলে হলে বান্ধবীসহ অবস্থান করার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। প্রায়ই তিনি হলে বান্ধবীসহ আসেন। এর আগে স্বরস্বতী পূজায় রফিক—জব্বার হলে বান্ধবীসহ সময় কাটান বলে জানিয়েছেন তার কয়েকজন বন্ধু।
প্রত্যক্ষদশীর্ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন জয়দীপ রাত ৩টার পর হলে আসেন। হলের করিডোরে কিছুক্ষণ পায়চারি করে গার্ডদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এরপর হলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকা বান্ধবীকে নিয়ে লিফটের দিকে এগিয়ে যান। নিরাপত্তায় নিয়োজিত গার্ডরা জানান, তারা প্রায় আধা ঘণ্টা সেখানে অপেক্ষা করলেও কাউকে পুনরায় বের হয়ে যেতে দেখেননি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জয়দীপ দাস বলেন, ‘মূলত হল ঘুরে দেখানোর উদ্দেশ্যে আমার বান্ধবীকে হলে নিয়ে এসেছিলাম। আমার রুমে মাত্র ২ মিনিট অবস্থান করি। বাকিসময় গেস্টরুমে বসে কথা বলেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাকে হলে নিয়ে আসলেও তাকে গেস্টরুম পর্যন্তই নিয়ে এসেছি। এবারই প্রথম তাকে হলের ভেতরে নিয়ে গেলাম।’
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক, জাবির সহকারী প্রক্টর রনি হোসাইন বলেন, ‘গার্ডদের সাথে কথা বলে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপর আমরা শৃঙ্খলা কমিটির কাছে প্রতিবেদন জমা দেব। একইসঙ্গে আমরা হলের গার্ডদের কারণ দশার্নোর নোটিশ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ২১ নম্বর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তাজউদ্দীন শিকদার জানান, ‘আমি ঘটনাটি জেনেছি। প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে তার (জয়দীপ) সঙ্গে কথা বলেছি। সে সবকিছু স্বীকার করে নিয়েছে। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ৭ জুন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ‘‘সত্যতা যাচাই’’ কমিটি গঠন করেছি। তারা প্রতিবেদন পেশ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’