
বিয়েপাগল ইউপি সদস্য সাদ্দাম হোসেন মোল্লা। এ পর্যন্ত দুটি বিয়ে করেছেন। দুটি বিয়েই আবার প্রেমের সম্পর্কে করা। প্রথম স্ত্রীকে দুই সন্তানসহ তালাক দিয়েছেন। দ্বিতীয় স্ত্রী প্রবাসে থাকেন। এরই মধ্যে আবার এক নারী ইউপি সদস্য যিনি দুই সন্তানের জননী তাকে নিয়ে উধাও হয়েছেন!
তিন দিন ধরে তাদের পরিবারের স্বজন ও ইউপি চেয়ারম্যান খুঁজে পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় স্ত্রী নিখোঁজের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নারী ইউপি সদস্যের স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায়। তারা দুজনেই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেলে রেখে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য (৩০) আরেক ইউপি সদস্য সাদ্দাম মোল্লার হাত ধরে উধাও হয়েছেন। তিন দিন ধরে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইশাখাবাদ গ্রামের মরহুম খোরশেদ মোল্লার ছেলে ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাদ্দাম মোল্লার (৩০) সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য দীর্ঘদিন পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে নারী সদস্যের স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল। এর জের ধরে গত শনিবার নারী সদস্যের সঙ্গে তার স্বামীর কথা কাটাকাটি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নারী ইউপি সদস্য উল্টো স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।
পরদিন রোববার থানা থেকে তাদের ডেকে পাঠানো হলে সকালে নারী সদস্যের স্বামী তার পরিবারের লোকজনসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। তবে অভিযোগকারী ওই নারী ইউপি সদস্য থানায় হাজির হননি। পরে অভিযোগকারী না আসায় তারা ফিরে আসেন। এরপর থেকে নাজমা বেগমের ফোন নম্বরটি বন্ধ পান পরিবারের লোকজন। এরপর থেকেই নিখোঁজ তিনি।
এ ঘটনার পর থেকে ৩নং ইউপি সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেনও এলাকায় নেই। তার মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ। পরে এ ঘটনায় নাজমার স্বামী হরিরামপুর থানায় নাজমার নিখোঁজের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
নাজমার স্বামী মো. ইছাক মিয়া বলেন, সাদ্দামের সঙ্গে আমার স্ত্রীর পরকীয়া ছিল। নিষেধ করলেও সে তা মানেনি। আমাদের ১৪ বছরের সংসার। আমাদের দুইটি ছেলেসন্তান রয়েছে। একজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়টি জানতে সাদ্দাম মোল্লা ও নারী সদস্যের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বিষয়টি লজ্জাজনক জানিয়ে বলেন, এ ধরনের জনপ্রতিনিধিদের কাছে জনগণ ভালো কিছু পাবে না! যেহেতু আমি দুই দিন তাদের খোঁজাখুঁজি করলাম পেলাম না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছি। আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি অবগত হয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অফিসিয়াল রিপোর্ট দিলে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে জানাব। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে, আইন অনুযায়ী দুই ইউপি সদস্যকে শোকজ করা হবে। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না পেলে পরবর্তীতে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।