দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক শোরগোল এবং আলোচনা তুলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক নির্বাচনী প্রতিনিধিদল আসে গেলো ৯ জুলাই। ছয় সদস্যের প্রতিনিধি এসেই বৈঠক করে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন ও বিচার, তথ্য ও সম্প্রচার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে।
একই দিন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা।
১০ জুলাই ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্যরা।
১১ জুলাই তারা বসে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব কমিশনাররা অংশ নেন বৈঠকে। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান রিকার্ডো চ্যালেরি।
১২ জুলাই আবারও তারা বৈঠকে বসেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। কিন্তু ইইউ প্রতিনিধিদলের মুখে ছিলো কুলুপ আঁটা।
১৩ জুলাই তারা যায় সিলেটে। বৈঠক হয় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে। মূলত নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এলে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা থাকতে পারে- তাই জানা বোঝার চেষ্টা করেন তারা।
১৫ জুলাই সরকার পরিচালনায় থাকা আওয়ামী লীগ, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি, সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীসহ বেশক’টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। এমনকি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকা কয়েকটি দলের সঙ্গেও বৈঠক করে ইইউ প্রতিনিধিদল।
একই দিন তারা দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
১৬ জুলাই তাদের মিটিং হয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। পরের দিন কয়েক দফায় তারা বসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় র্যাব পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন তারা। ২৩ জুলাই বাংলাদেশ ছাড়ার আগে যে কদিন এখানে অবস্থান করেছে ইইউ প্রতিনিধিদল, প্রতিদিনই নাওয়া খাওয়া ভুলে সকাল সন্ধ্যা কাটিয়েছে ব্যস্ত সময়।
১৫ দিন বাংলাদেশে অবস্থান করে ইইউ প্রতিনিধিদল সরকারি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ৭৫টির মতো বৈঠক করে বুঝতে চেষ্টা করেছে, এখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ, আসছে নির্বাচনের সময় পরিস্থিতি কেমন থাকতে পারে ইত্যাদি নানা বিষয়। বাংলাদেশে অবস্থানকালে প্রদীপের আলোয় থেকেছে পুরোটা সময়। গণমানুষেরও তাদের নিয়ে ছিলো ব্যাপক আগ্রহ। ফলে গণমাধ্যমও ছুটে বেড়িয়েছে তাদের পেছনে। কিন্তু সরবে আসা ইইউ প্রতিনিধিদল নীরবে নিভৃতে বাংলাদেশ ছাড়ে ২৩ জুলাই। কী দেখলেন, কী বুঝলেন- এ নিয়ে গণমাধ্যমেও কথা বলেননি। দেননি কোনো বিবৃতিও।
সূত্র : সময় নিউজ