নেত্রকোণায় পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের ফলে গর্ভে সন্তান আসার পর স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিয়ে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
নেত্রকোণা সদর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের হাবুলিয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, হাবুলিয়া গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল একই গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার পুত্র রোকন মিয়ার। সম্পর্কের এক পর্যায়ে রোকন মিয়া রাতের আঁধারে মেয়ের ঘরে লুকিয়ে রাত্রি যাপন করার সময় পরিবারের লোকজন টের পেয়ে যায়। পরে মেয়েটির পরিবারের লোকজন রোকনের পরিবারকে জানালে তারা টালবাহানা শুরু করে। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা না হওয়ায় মেয়েটির পিতা নজরুল বাদী হয়ে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে রুকন মিয়া দীর্ঘদিন কারাভোগ করে। পরে জামিন নিয়ে বের হয়ে রোকন অন্যত্র বিয়ে করে। বিয়ে করার এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও রুকন মিয়া মেয়েটির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক বজায় রাখে।
গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) গভীর রাতে মেয়েটির ঘর থেকে রোকনকে আটক করে বেঁধে রাখে তার পরিবারের লোকজন।
এ ব্যাপারে মেয়ের বাবা নজরুল মিয়া বলেন, আমার মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে রোকন। রোকনের নামে আমি নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছি। মামলার পরও আমার মেয়ের ঘরে রোকন রাতে প্রবেশ করলে আমরা টের পেয়ে যাই এবং রোকনকে হাতেনাতে ধরে বেঁধে রাখি। পরে স্থানীয় মাতব্বরদের হাতে সোপর্দ করা হয়। রোকনের দ্বারা আমার মেয়ে গর্ভবতী হয়েছে। আমি রোকনের বিচার চাই।
মেয়ের নানি মালেকা বেগম জানান, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পর থেকেই নাতনিকে আমি লালন পালন করেছি। রোকন মিয়া বিবাহিত হওয়ার পরও আমার নাতনিকে ফুসলিয়ে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এখন আমার নাতনি গর্ভবতী, তার গর্ভে রোকনের সন্তান। আমার নাতনিকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে উল্টো মাতব্বরদেরকে দিয়ে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে আমাদেরকে চাপ দেয়া হচ্ছে মীমাংসার জন্য। আমরা টাকা চাই না গর্ভের সন্তান পিতৃ পরিচয় চাই এবং রোকনের বিচার চাই।
মেয়ের সৎমা সুফিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে রোকন মিয়া আমার সৎমেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে আসছে। আমরা এর আগেও সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছিলাম, তিনি সমাধান দিতে না পারায় তার পরামর্শে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। মামলা চলমান অবস্থায় রোকন একই ঘটনা ঘটিয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে তিনি সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করছেন। তবে আমরা মেয়ের গর্ভের বাচ্চার পিতৃ পরিচয় চাই ও এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত রোকন মিয়া মোবাইল ফোনে জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা চেয়ারম্যানের কাছে সব জানতে পারবেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ফারাস দিলীপ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেয়েটির সঙ্গে রোকনের অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে বিরোধ চলে আসছে এবং আদালতে মামলা চলমান আছে। তিনি বলেন, বিগত মঙ্গলবার রাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর দু’পক্ষকে নিয়ে সালিসি বৈঠক করেছি, প্রেগন্যান্সি রিপোর্টের সত্যতা সাপেক্ষে ডিএনএ টেস্ট করা হবে এবং সামাজিকভাবে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করবো। যেহেতু রুকন বিবাহিত ও তার পরকীয়া প্রেমিকার গর্ভে বাচ্চা তাই বিষয়টা জটিল।
সূত্র : ঢাকাটাইমস